রাজধানীর তুরাগ এলাকায় রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদার হত্যার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৫ মে) আশুলিয়া ও দিয়াবাড়ি এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. সবুজ ফকির (২৮), কালাম (২২) ও মো. শাকিল (১৮)। তাদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে।
তুরাগ থানা সূত্রে জানা যায়, তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ি মেট্রো গোলচত্বর এলাকায় অবস্থিত রাইদা বাস ডিপোর মালিক আনোয়ার হোসেন সিকদার (৫৩) গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে রাইদা ডিপোর উদ্দেশে বের হন। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি বাসায় ফিরে না আসায় এবং ফোন রিসিভ না করায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তাকে কোথাও না পেয়ে পরদিন ১৮ জানুয়ারি তুরাগ থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন আনোয়ারের স্ত্রী শিউলি আক্তার।
থানা সূত্রে জানা যায়, জিডির প্রাথমিক তদন্তকালে তথ্য পাওয়া যায়, ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে আনোয়ারকে হত্যা করা হয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সম্ভাব্য হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়। রোববার (২৫ মে) বেলা আড়াইটায় আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কালাম ও শাকিলকে গ্রেপ্তার করে তুরাগ থানা পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তুরাগ থানা পুলিশ দিয়াবাড়ী মেট্রো গোলচত্বরের ডেসকো অফিসের পূর্ব পাশে রাইদা ডিপোর ভেতরের উত্তর পাশের টিনের বেড়া সংলগ্ন মাটির নিচ হতে আনোয়ারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। ভিকটিমের পরিবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আনোয়ারের মৃতদেহ শনাক্ত করে। পরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ভিকটিম আনোয়ারের স্ত্রী শিউলি আক্তার বাদী হয়ে গ্রেপ্তারসহ আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
থানা সূত্র আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা স্বীকার করে যে, তারা সবাই রাইদা বাসের চালক। গত ১৭ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে রাইদা বাস ক্রয়-বিক্রয়ের লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তারা ও তাদের কয়েকজন সহযোগী মিলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আনোয়ার হোসেন সিকদারকে রাইদা বাস ডিপোর ভেতরে হত্যা করে। তারা প্রথমে ভিকটিমের মাথায় লোহার পাইপ দ্বারা আঘাত করে এবং পরে গলায় ধারাল ছুরি দ্বারা আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর তারা লাশ গুম ও প্রমাণ নষ্ট করার উদ্দেশে নিহত আনোয়ারের মৃতদেহ বাস ডিপোর উত্তর পাশে টিনের বেড়ার কাছে মাটির নিচে পুঁতে রাখে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।