কোনো বাসায় গিয়ে ছোট শিশুকে ঢুকিয়ে দিতেন দুই নারী। বাসা থেকে বের হয়ে ওই শিশু ভেতরের সব তথ্য তাদের জানাতেন। এরপর একজন ঘরে ঢুকে চুরি করতেন, আরেকজন বাইরে পাহারা দিতেন। এভাবেই তারা করতেন চুরি। তবে বিপত্তি বাধে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসের এক বাসায় চুরি করতে গিয়ে। ওই বাসার সিসিটিভিতে ধরা পড়ে তাদের চুরির কাহিনি। সেই সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ ওই দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
ভাইরাল হওয়া ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দুই নারী এক শিশুকে নিয়ে লিফট থেকে বের হয়ে ওই ফ্ল্যাটের সামনে দাঁড়ান। এরপর শিশুটি ফ্ল্যাটের দরজায় হাত দিয়ে খোলা কি না সেটি যাচাই করে। দরজা খোলা পেয়ে শিশুটি ফ্ল্যাটের ভেতরে প্রবেশ করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তার সঙ্গে এক নারীও ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর ওই নারী বের হয়ে আসেন, পেছনে পেছনে শিশুটিও বের হয়ে আসে। তিনজন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামে। কিছুক্ষণ পর তারা আবার ওই ফ্ল্যাটের সামনে যায়। শিশুটি আবার যাচাই করে দরজা খোলা কি না।
এরপর খোলা পেয়ে শিশুটি আবার ফ্ল্যাটের ভেতরে যায়, আর দুই নারী সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামেন। কিছুক্ষণের মধ্যে শিশুটির পেছনে পেছনে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে এক নারী। আর আরেকজন সিঁড়িতে পাহারা দিতে থাকেন। প্রায় তিন মিনিট পর ব্যাগভর্তি মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে বের হয়ে যান ওই নারী। তারপর দ্রুত ওই বাসা ছাড়েন তারা।
এমন ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাতে নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় থেকে চোর চক্রের দুই নারী এবং তাদের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই নারী সম্পর্কে ভাবী ও ননদ। এ চক্রে রয়েছেন তাদের স্বামীরাও। মিরপুরের ডিওএইচএসসহ বিভিন্ন চুরির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চক্রটিকে চিহ্নিত করার পর শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণ, মোবাইল ও ল্যাপটপ।
গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, এই চক্রটি শুধু রাজধানী নয়, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি করত।
আপনার মতামত লিখুন :