• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল গেলেন প্রধানমন্ত্রী


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৩, ০৩:১২ পিএম
মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছবি : সংগৃহীত

মেট্রোরেলে করে আগারগাঁও-মতিঝিল গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাত্র ২৫ মিনিটে মতিঝিলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। ভ্রমণকালে তিনি গণমাধ্যমকর্মী ও সফরসঙ্গীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির এ যানে আগারগাঁও থেকে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর ৩ টা ৬ মিনিটে রেলের মতিঝিল প্রান্তে পৌঁছান।

এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, শনিবার আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন হলেও রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে শুরু হবে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেলের চলাচল। এ পথে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দূরত্বের পথ মাত্র ৩৮ মিনিটে পার হতে পারবেন যাত্রীরা। এই পথের জন্য ভাড়া গুনতে হবে ১০০ টাকা। মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে। প্রতিটি ট্রেন ২ হাজার ৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কমে যাবে।

জানা গেছে, এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পটি ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাইকার সঙ্গে চুক্তি সই হয়। প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের কথা ছিল। যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনায় সেটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার। বর্তমানে বর্ধিত অংশের অর্থাৎ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। যদিও নির্মাণকাজের শুরুতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।

তিনটি ধাপে এই মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজ করা হয়। তৃতীয় ধাপে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এ অংশের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এ অংশের অবকাঠামো নির্মাণের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন রয়েছে। নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি থাকায় প্রথম পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা চলবে। মতিঝিল থেকে আগারগাঁও অংশে শুধু মতিঝিল, সচিবালয় ও ফার্মগেট—এই তিন স্টেশনে থামবে মেট্রোরেল। প্রতি ১০ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়বে। আপাতত বিজয় সরণি, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে না। তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত আগের মতো রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে। মেট্রোরেল উত্তরা থেকে পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে।

এ পথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই পথের স্টেশনগুলো হচ্ছে—উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয়সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল। প্রতিটি ট্রেনে ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী ধারণক্ষমতা রয়েছে। সর্বোচ্চ গতি ১০০ কিলোমিটার। উত্তরা থেকে মতিঝিল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। উত্তরা থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও-বিজয়সরণি পর্যন্ত ৬০ টাকা, ফার্মগেট ৭০ টাকা, কাওরান বাজার-শাহবাগ ৮০ টাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ সচিবালয় পর্যন্ত ৯০ টাকা।

এর আগে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে উন্নত দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যানজটের নগরীতে যাত্রীদের নতুন অভিজ্ঞতা আর স্বস্তির যাত্রার স্বপ্ন দেখিয়ে মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করেছিল বাংলাদেশ।

Link copied!