• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
উপজেলা নির্বাচন

মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ০৬:২২ পিএম
মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

আসন্ন উপজেলার নির্বাচন থেকে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকেরা নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের দলের এই নির্দেশ জানাতে শুরু করেছেন। এরপরও কেউ ভোট থেকে সরে না দাঁড়ালে বহিষ্কারসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন গণামধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা সকালে ধানমন্ডি অফিসে বসেছিলাম। তখন দলের সাধারণ সম্পাদক নেত্রীর নির্দেশটি আমাদের অবগত করেন এবং নেত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে দ্রুত তাগিদ দেন।”

দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দলের নেতাদের দাবির মুখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। মূল লক্ষ্য ছিল সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনটি প্রভাবমুক্ত রাখা। কিন্তু ভোট শুরুর পর দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা নিজের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোটে দাঁড় করিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। এটা পছন্দ করছেন না দলের প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি কঠোরভাবে প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলের প্রধানের নির্দেশনা পেয়ে ওবায়দুল কাদের আজ বৃহস্পতিবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন।

এতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এই সময় ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে সারা দেশে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাঁদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।

এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে মাদারীপুর সদরের সংসদ সদস্য ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এবং নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। এই দুই স্থানে সংসদ সদস্যের ছেলেরা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। সংসদ সদস্যরা সন্তানদের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করছেন।

সূত্রমতে, আগামী ২ মে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। ওই অধিবেশন সংসদীয় দলের বৈঠকে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদেরও বৈঠক হতে পারে। সেখানেও বিষয়টি আলোচিত হবে।

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, এমপি-মন্ত্রীরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও নানাভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে দেশের ১৫২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৩ এপ্রিল।

আর দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, এ ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ এপ্রিল, বাছাই ২৩ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। এই নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে।

নির্বাচন কমিশন জানায়, দেশের ৪৮১টি উপজেলায় চার ধাপের নির্বাচন শুরু হবে ৮ মে, শেষ হবে জুনের প্রথম পক্ষে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই ধাপের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে।

Link copied!