জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা সারোয়ার তুষারের সঙ্গে ফাঁস হওয়া
কথোপকথনটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন দলটির আরেক নেত্রী নীলা ইস্রাফিল।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্টে এ কথা স্বীকার করেন।
পোস্টে নীলা ইস্রাফিল বলেন, “নেপালে যাওয়ার পর থেকে তুষার প্রায়ই ফোন করত ও তার আলাপের ধরন পাল্টাতে থাকে। সে আমাকে বিভিন্নভাবে অ্যাপ্রোচ করতে থাকে, ‘তোমার ছবি দাও, তোমার ঠোঁট সুন্দর, তোমার স্লোগান, তোমার প্রতিবাদী কণ্ঠ আমাকে আকৃষ্ট করে।’ আমি তুষারকে এই ধরনের আলাপে সব সময়েই বিব্রতবোধ করেছি এবং তাকে আমাদের সম্পর্ক সাংগঠনিক ও ফর্মাল রাখতে অনুরোধ রেখেছি। যেহেতু বাংলাদেশের নতুন রাজনীতি, এনসিপি আমার জীবনের প্রধান অবলম্বন, আমি তুষারকে তার আগ্রাসী আচরণ সংযত রেখে, ফর্মালভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখি। বাংলাদেশের অসংখ্য নারীকে ক্ষমতাবান পুরুষের সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হয়।”
ভাইরাল কথোপকথনের বিষয়ে নীলা ইস্রাফিল বলেন, “ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখে এনসিপির আত্মপ্রকাশের দিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি। রোজার সময় একদিন তুষার আমাকে অত্যন্ত আপত্তিকর একটি কথা বলে। ইতোপূর্বে সকল আলাপের সীমা ছাড়ানো এই আলাপে আমি বিব্রত বোধ করি এবং ওকে জানাই যে আমি আর কথা বলতে চাই না। কিন্তু তুষার আমাকে আলাপের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে তুষার আমাকে জানায় ডিটেকটিভ পুলিশ বা ডিবি ওর সঙ্গে কথা বলেছে, সেই বিষয়ে সে আমার সঙ্গে আলাপ করতে চায়।”
নীলা একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি উল্লেখ করে আরও লিখেন, “তুষার আমাকে ডিবির কথা বলেছে, তাই আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি নিশ্চয়ই আইনি, ডিবি ও পুলিশসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হতে পারে এবং আমার নিরাপত্তার জন্য হুমকির কোনো বিষয় থাকতে পারে—এই বিবেচনায় আমি আলাপটি রেকর্ড করি। প্রায় দেড় ঘণ্টার আলাপে ৪৭ মিনিট আমি রেকর্ড রাখি। তুষার আমাকে জানায়, ডিবি তাকে নীলা ইস্রাফিল সম্পর্কে জানতে চেয়েছে এবং সে ডিবিকে জানিয়েছে যে নীলা তার গার্লফ্রেন্ড—যা নিয়ে আমি তুষারকে প্রশ্ন করি। তাছাড়া আমরা তুষারের খারাপ প্রস্তাব নিয়েও আলাপ করি। আমি তাকে প্রশ্ন করি, আমার কোনো অ্যাটিটিউড, ব্যবহার বা আচরণে মনে হয়েছে আমাকে এই ধরনের প্রস্তাব করা যেতে পারে? তুষার আমাকে বিষয়টি ভুলে যেতে বলে।”
সম্প্রতি বিষয়টি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে জানান উল্লেখ করে নীলা লিখেছেন, “কোরবানির দিন রাতে একটি অনুষ্ঠানে নাহিদের সঙ্গে দেখা হয় এবং নাহিদকে বিষয়টি জানাই। নাহিদ আমাকে বিষয়টি দলীয় শৃঙ্খলার দিক থেকে ডিল করতে ও মহানগরে দায়িত্বে থাকা শাহরিয়ার ও নিজামকে বিষয়টি অবগত করতে বলে। যে দিন সন্ধ্যায় শাহরিয়ার ও নিজামকে আমি জানাই, তার পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারি যে, অডিওটি কেটে সামাজিক মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে। এরপর আমাকে নিয়ে যে মিডিয়া ট্রায়াল হয়, তাতে আমি দেখতে পেয়েছি, আমার নারী সহকর্মীরাও আমার পক্ষে দাঁড়ায় নাই।”