• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

জাপানে ফিরে যেতে চায় জেসমিন মালিকা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০৩:১৬ পিএম
জাপানে ফিরে যেতে চায় জেসমিন মালিকা

জাপান ফিরে যাওয়ার আর্জি জানিয়েছে নাকানো এরিকো ও ইমরান শরীফের বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা। সে বলে, “আমি জাপান যেতে চাই। আমাকে বলা হয়েছিল যে আমরা আমেরিকায় যাব। কিন্তু আমরা আমেরিকায় যেতে পারব না। দুই বছর থেকে আমরা এখানে (বাংলাদেশ) আছি।”

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে সে।

মায়ের পক্ষ নিয়ে জেসমিন মালিকা বলে, “আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। আমার মায়ের বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। আমি নির্ভরযোগ্য রিসার্চ করেছি। আমি সব জানতে পেরেছি।”

জেসমিন মালিকা বলে, জাপানে সব কিছু রয়েছে। আমার স্কুল, সংস্কৃতি, বন্ধুবান্ধব সবকিছু জাপানে। আমি এখানে কীভাবে থাকব? আমি সেখানে যেতে চাই।”

এসময় জাপানি মা এরিকো নাকানো বলেন, “১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট পারিবারিক আদালতকে তিন মাসের মধ্যে মামলাটি শেষ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ইমরান বিলম্ব করছেন। এটি প্রায় এক বছর হয়ে গেছে। এখনো বিচার চলছে। তাই আমার মা ও তৃতীয় মেয়ে সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করা আমার জন্য জরুরি। বাংলাদেশে আমার অবর্তমানে মেয়েদের দেখাশোনার জন্য কেউ নেই। এমতাবস্থায় তাদের সঙ্গে নিয়ে আমার মুমূর্ষু মাকে দেখতে জাপান যেতে চেয়েছিলাম।”

ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এরিকো নাকানো বলেন, “ইমরান আমার ব্যক্তিগত জীবন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য বেশ কিছু গুপ্তচর নিযুক্ত করেছেন। এমনকি আমরা কাছাকাছি শপিং মলেও যেতে পারি না। বিষয়টি আমি থানা ও পারিবারিক আদালতকে জানালেও তারা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। ইমরান আমার ড্রাইভার, অনুবাদক, বন্ধু ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছেন। এমনকি সে আমার বাসার রিয়েল এস্টেট ম্যানেজারকেও হুমকি দিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ইমরান আদালতের আদেশ অমান্য করছে। সে বেশ কয়েকবার আমাকে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। ভিসা কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা করেনি। তারা মূলত আমার ভিসা প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে এবং অপ্রয়োজনে বিভিন্ন প্রমাণপত্র দেখতে চায়।”

এ সময় জেসমিন মালিকার সঙ্গে তার মা এরিকো নাকানো ও তাদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির উপস্থিত ছিলেন।

২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।

মেয়েদের জিম্মায় পেতে গত বছরের জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েকমাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা সেটা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।

এরপর দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে, তা নিষ্পত্তি করতে গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক আদালতকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে যায়।

Link copied!