• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আমদানি কমলেও ব্যয় বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৩, ০২:৪৫ পিএম
আমদানি কমলেও ব্যয় বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে
ফাইল ছবি

দেশের দ্বিতীয় রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় আমদানি কমে গেছে ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবে আমদানি কমে গলে আমদানি ব্যয়ও কমার কথা। কিন্তু এ বছর আমদানি ব্যয় বেড়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ।

দেশের সবচেয়ে বড় শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয় ৮ দশমিক ৮৫ কোটি মেট্রিক টন পণ্য। এসব পণ্যের আমদানি মূল্য ছিল ৪ দশমিক ৬২ লাখ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৯ দশমিক ২১ মেট্রিক টন পণ্য। এসব পণ্যে আমদানি মূল্য ছিল ৪ দশমিক ২০ লাখ কোটি টাকা।

এদিকে, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬১৬৩২ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৫৯১৫৯ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

অন্যদিকে, রিজার্ভ বাঁচাতে সরকার গত বছরের মাঝমাঝি থেকে আমদানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার পর আমদানির পরিমাণও কমে আসে।

ব্যবসায়ী এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান বিশ্ববাণিজ্যে মন্দা পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ফলে আমদানির পরিমাণ কমে গেলেও বেড়ে যায় খরচ। খরচ বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত শুল্কও পরিশোধ করতে হয়েছে। বাড়তি দাম এবং বেশি শুল্কের কারণে খুচরা বাজারে পণ্যের দামও বেড়ে যায়।

তারা বলছেন, ডলারের দামকে স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তরিত করার পর ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়ার ফলে আমদানি পণ্যে খরচ বেড়ে গেছে।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, গত এক বছরেরও কম সময়ে আমদানিতে ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকায় পৌঁছেছে। এমনকি আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার জন্য ব্যাংকগুলোও প্রয়োজনীয় ডলারের সংকটে পড়েছে।

চট্টগ্রাম কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ডলারের উচ্চমূল্য ও বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় আমদানি পণ্যের দাম অনেক বেশি বাড়িয়ে তুলেছে। এর ফলে পণ্য আমদানি কমলেও ব্যবসায়ীদের বাড়তি দামে পণ্য আমদানি করতে হয়েছে। আমদানি ব্যয় এবং শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ভোক্তা পর্যায়ে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়।

কমেছে শুল্কায়ন

অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ আমদানি কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুন মাসে আমদানি হয় ৬৫,৫৮,৬৯১ মেট্রিক টন পণ্য।

সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় এমন ২০ ধরনের পণ্যের মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি বেড়েছে মাত্র চার ধরনের পণ্যে। এসব পণ্যের মধ্যে সিমেন্ট ক্লিংকার ৫ শতাংশ, ব্রোকেন অর ক্রাশড স্টোন ৭৭ শতাংশ, কয়লা ৪৫ শতাংশ এবং পাম অয়েল ৩৬ শতাংশ আমদানি বেড়েছে।

এই ২০ ধরনের পণ্যে আমদানি কমেছে ৫০ শতাংশ। আমদানি কমে গেলেও আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে কাস্টমস আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ রাজস্ব বেশি আদায় করতে পেরেছে।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আগের অর্থবছরের তুলনায় আরও ২০টি পণ্যের আমদানি কমে গেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বালানি তেল, বৈদ্যুতিক কন্ডাক্টর, মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ, রিকন্ডিশনড মোটরকার, টেক্সটাইল ফ্যাব্রিকস এবং ক্রুড ওয়েল।

এক বছরের ব্যবধানে ২০ ধরনের পণ্যে আমদানি কমে যাওয়ায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায় কমে গেছে ৫,৫৫৮ কোটি টাকা।

Link copied!