রাজধানী গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে ভবনে বিস্ফোরণে ঘটনায় নিহত ১৬ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) রাত ২টা পর্যন্ত লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার দাশ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাদের পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা আহত না নিহত, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যে ১৬ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে
মুনসুর, আলামিন, আবু বক্কর সিদ্দিক, নাজমুল হোসেন, রাহাত, ওবায়দুল হাসান, নুরুল ইসলাম, হৃদয়, মাইনুদ্দিন, মমিনুল, নদী, আকুতি বেগম, ইসমাইল হোসেন, ইছহাক মৃধা, সুমন ও আব্দুল হাকিম।
নিখোঁজ তিনজন হলেন মেহেদী হাসান, ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া ও ইয়াসিন। স্বজনেরা হাসপাতালে এসে তাদের কোনো খোঁজ পাননি।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ১৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আবাসিক সার্জন এসএম আইউব হোসেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ভবনে উদ্ধারকাজ স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস। তারা জানিয়েছে, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ভবনের বেজমেন্টে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব নয়। তাই উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার সকালে সেনাবাহিনী আসবে, তারপর উদ্ধারকাজ শুরু হবে।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা, আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলাও বিধ্বস্ত হয়েছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকা। দেয়াল ভেঙে এসে পড়ে রাস্তায়। বহু মানুষ উড়ে এসে রাস্তায় পড়েছেন। সড়কে থাকা বহু গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোও। ভেঙে পড়েছে অনেক ভবনের কাঁচ। বাসযাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী পর্যন্ত আশেপাশে থাকা সবাই হতাহত হয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :