• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ঐকমত্য কমিশনের মোট ব্যয় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ১০:০৮ এএম
ঐকমত্য কমিশনের মোট ব্যয় ১ কোটি ৭১ লাখ টাকা

সম্প্রতি একটি মহল কর্তৃক সংগঠিত অপপ্রচারে দাবি করা হচ্ছে যে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আপ্যায়ন বাবদ ৮৩ (তিরাশি) কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এ ধরনের বক্তব্য সর্বৈব মিথ্যাচার এবং পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা।

স্পষ্টতই যেহেতু এটি একটি উদ্দেশ্যমূলক প্রচেষ্টা, স্বাভাবিকভাবেই অপপ্রচারকারীরা কমিশনের কোনো ভাষ্য সংগ্রহ করেননি এবং সংশ্লিষ্ট তথ্যের যথার্থতা যাচাইয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি।

জনমনে বিভ্রান্তি এড়াতে কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো যাচ্ছে যে, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে কার্যক্রম শুরু করার পর ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বমোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর বিপরীতে ৩১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত কমিশনের মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

কমিশনের মোট বরাদ্দের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা। এই আপ্যায়ন ব্যয়ের সিংহভাগ হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সময় এবং কমিশনের বিভিন্ন বৈঠকে।

প্রথম পর্যায়ে (২০ মার্চ–১৯ মে ২০২৫) রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৪৪টি বৈঠকে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ২৩টি সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ব্যয় হয়েছে ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা। প্রতিদিনের গড় ব্যয় ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম।

তৃতীয় পর্যায়ে ৭টি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন, এবং এই পর্বের মোট ব্যয় ছিল ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।

এর বাইরে কমিশনের ৫০টি অভ্যন্তরীণ সভায় ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা।
রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক এবং তিনটি সাংবাদিক সম্মেলনসহ ১৩টি সভায় ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৩৪০ টাকা।

আরও পড়ুন
৬৬ দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দিলো ইসি
২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন
পাখির খাদ্যের আড়ালে পাকিস্তান থেকে এলো ২৫ হাজার কেজি মাদক
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ১৩টি বৈঠকে আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা— উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞগণ কোনো ভাতা বা সম্মানী গ্রহণ করেননি।

এছাড়া নয় মাসে অতিথি আপ্যায়নের জন্য ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা, যার মধ্যে বিদেশি কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতারা, সম্পাদক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন অতিথি ছিলেন।

ওপরের বিস্তারিত হিসাব থেকে স্পষ্ট যে, ৮৩ কোটি টাকার ব্যয়ের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এটি কেবল মিথ্যাচারই নয়, বরং ঐকমত্য কমিশন ও তার কাজকে হেয় করার এক সংগঠিত ও পরিকল্পিত অপপ্রয়াস।

কমিশন তার দায়িত্বকালীন সময়ে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে। গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা সহজেই কমিশন কার্যালয়ে উপস্থিত হতে পেরেছেন, সহসভাপতি ও সদস্যরা নিয়মিতভাবে সংবাদ সম্মেলন ও ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তথ্য প্রদান করেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সরাসরি টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।

কমিশন আশা করে যে, যেসব অসাধু মহল অসৎ উদ্দেশ্যে এই প্রপাগান্ডা চালাচ্ছেন, তারা অবিলম্বে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। একই সঙ্গে কমিশন বিশ্বাস করে, দায়িত্বশীল গণমাধ্যমগুলোর সঠিক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্তির হাত থেকে রক্ষা করবে।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!