আজ ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের এই দিন দল প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে চারবার রাষ্ট্র পরিচালনা করে বিএনপি।
১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার তিন বছর পর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। নিজের গড়া জাগো দলের বিলুপ্তি ঘটিয়ে ১৯৭৮ সালের পয়লা সেপ্টেস্বর রমনা রেস্তোরাঁয় ঘোষণা করেন বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো।
উনিশ দফা কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে চলা দলটি পরের বছরই জয়ী হয় সংসদ নির্বাচনে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে, এদেশের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সেজন্য জিয়াউর রহমানকে এদেশের জনগণ গ্রহণ করেছে।’
১৯৮১ সালের ৩০ মে বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে জিয়াউর রহমান নিহত হলে বিএনপির হাল ধরেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর নেতৃত্বে তিনবার সরকার গঠন করে দল।
২০০৭ সালের জরুরি অবস্থার পর কঠিন রাজনেতিক সংকটের মুখোমুখি হয় বিএনপি। টানা দেড় দশক আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নের মুখে রাজনীতির মাঠে কোনঠাসা হয়ে পড়ে দলটি। মিথ্যা মামলায় দুই বছর কারাগারে থেকেছেন খালেদা জিয়া। নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেলেও অসুস্থতা ও আইনী জটিলতায় রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় থাাকেন বিএনপিপ্রধান।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে উজ্জীবিত হন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায় পুরো দল।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে নতুন করে জেগে উঠবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে সত্যিকার অর্থেই একটি উদার, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপি যেমন অতীতে মানুষের কাছে সমাদৃত হয়েছে, সেভাবেই সমাদৃত হওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের আদর্শ রাজনৈতিক নেতা-কর্মী হতে হবে।’
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ৭ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে। ৩১ আগস্ট রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টায় বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
বেলা ১১টায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে বিএনপি মহাসচিবসহ দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। কাল দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে।
২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে। ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা ও পৌরসভায় আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। এই উপলক্ষে পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। সমসাময়িক প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিএনপির উদ্যোগে গোলটেবিল বৈঠক হবে। সুবিধাজনক সময়ে ঢাকাসহ দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষ রোপণ অভিযান, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্রীড়ানুষ্ঠান হবে।