আদালতে কাঁদলেন সেই মতিউর, বললেন আমার পরিবারটা ধ্বংস হয়ে গেছে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম
আদালতে কাঁদলেন সেই মতিউর, বললেন আমার পরিবারটা ধ্বংস হয়ে গেছে

পৃথক দুই মামলায় ‘ছাগলকাণ্ডের’ আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিন জামিন শুনানিতে মায়ের প্যারালাইসিসের কথা বলেন। মাকে দেখার কেউ নেই বলে কান্না করেন। পরে বিচারক তাকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসাইন গালিবের আদালত এ ঘটনা ঘটে।

এদিন দুপুরে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মতিউর রহমানের পক্ষে আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান পৃথক দুই মামলায় জামিন চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।

‎দুই পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্যের পর কথা বলার অনুমতি চান মতিউর। আদালত অনুমতি নিয়ে তিনি বলেন, আমি কারাগার থেকে দুদককে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। আমি আপনাকে এ চিঠিটা দিলাম। আপনি দয়া করে আমার চিঠিটা পড়ে যে আদেশ দেবেন, আমি তা মাথায় পেতে নেবো। তিনি বলেন, আমার পরিবারটা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই কারাগারে। আমার মা প্যারালাইজড। তাকে দেখার কেউ নেই। এসময় তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, আমাকে জামিন দিন। আমাকে জামিন দিলে আমার কাছে যে নথিপত্র আছে, আমি তা আদালতে উপস্থাপন করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবো।

পরে বিচারক বলেন, আপনি দোষী বা নির্দোষ তা এখনই বলা যাবে না৷ মামলাটি এখন তদন্তাধীন। তাই আপনাকে আরও ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ২৯ আগস্ট মতিউর, তার দুই স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ পাঁচ জনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন। চলতি বছর ৬ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। আর ১৪ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার এবং ১৫ জানুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয়। পৃথক দুই মামলায় ৬৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে।

‎‎কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়।

এসব আলোচনার মধ্যে একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে মতিউর পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য।

‎পরে গত বছরের ৪ জুন মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানের নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ করা হয়। ‎পরে ২৪ জুন মতিউর ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!