পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জামিনে মুক্তির পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচনা করেছেন। শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ইমরান খান। এদিন রাতেই বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। এরপর শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় ভাষণ দেন।
রোববার (১৪ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ভাষণের শুরুতে পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ভঙ্গুরতা নিয়ে কথা বলেছেন পিটিআই নেতা। তিনি বলেন, “আজ আমাদের গণতন্ত্র সুতোয় ঝুলছে। কিন্তু বিচার বিভাগ চাইলেই একে বাঁচাতে পারে। কিন্তু মাফিয়ারা বিচার বিভাগের ওপর আক্রমণ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।”
তিনি বলেছেন, “আমাদের বোঝা উচিত যে পূর্ব পাকিস্তানের লোকদের ওপরে যে এত বড় অত্যাচার হয়েছে। ওদের যে পার্টি নির্বাচনে জিতেছিল যাকে তারা প্রধানমন্ত্রী বানাতে চেয়েছিল, বানানো উচিত ছিল। তার বিরুদ্ধে মিলিটারি অ্যাকশন নিয়ে নিল! দেশের বিভাজন উস্কে দিল। ৯০ হাজার সৈন্য আমাদের কয়েদী হয়ে গেল, আত্মসমর্পণ করল। কী পরিমাণ ক্ষতি হলো আপনারা চিন্তাও করতে পারবেন না।”
এ সময় পাকিস্তানের গণমাধ্যমকে ‘নিয়ন্ত্রিত’ বলে উল্লেখ করেছেন ইমরান খান। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত। ১৯৭১ সালে পূর্ব-পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পরিচালিত নির্যাতনের সময়ও তারা এমন ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আজ আবারও আপনাদেরকে পূর্ব পাকিস্তানের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। আমার জীবদ্দশায় আমি পূর্ব পাকিস্তান দেখেছি। ১৯৭১ সালের মার্চে আমি ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম পূর্ব পাকিস্তানে, সেখানকার অনূর্ধ্ব ১৯ দলের বিরুদ্ধে। আমাদের ফ্লাইটটি ছিল শেষ ফ্লাইট। আমার এখনো মনে আছে তাদের কী পরিমাণ ঘৃণা ছিল পাকিস্তানের প্রতি। এখানে তো আমাদের এসব জানাই ছিল না। মিডিয়া নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সে সময় পূর্ব পাকিস্তানে কী ঘটছে তা সম্পর্কে আমলা অজ্ঞ ছিলাম। আজকের মত। পার্থক্য হল এখন আমাদের কাছে আজ সোশ্যাল মিডিয়া আছে। যদিও তারা সোশ্যাল মিডিয়াও বন্ধ করে দিয়েছে।”
এছাড়াও তিনি তার গ্রেপ্তারের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন। রাজনীতিতে সেনা বাহিনী হস্তক্ষেপ করছে অভিযোগ তুলে সেনাপ্রধানকে রাজনৈতিক দল গঠনের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :