• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২,
  • ২ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

১৯ দেশের অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড আবার যাচাই করবে যুক্তরাষ্ট্র


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
১৯ দেশের অভিবাসীদের গ্রিন কার্ড আবার যাচাই করবে যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, ১৯টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের দেওয়া গ্রিন কার্ড পুনরায় কঠোরভাবে পর্যালোচনা করা হবে। মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা সংস্থার প্রধান জোসেফ এডলো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট তাকে যেসব দেশ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, সেসব দেশের নাগরিকদের দেওয়া প্রতিটি গ্রিন কার্ডের পুনরায় কঠোর পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। 

বিবিসি'র পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল কোন দেশগুলো তালিকায় রয়েছে, সংস্থাটি তখন হোয়াইট হাউসের জুন মাসের এক ঘোষণার দিকে ইঙ্গিত করে। সেই ঘোষণায় আফগানিস্তান, কিউবা, হাইতি, ইরান, সোমালিয়া ও ভেনেজুয়েলার নাম ছিল।

চৌঠা জুনের সেই ঘোষণার শিরোনাম ছিল, ‘রেসট্রিক্টিং দ্য এন্ট্রি অফ ফরেন ন্যাশনালস টু প্রটেক্ট দ্য ইউনাইটেড স্টেটস্ ফ্রম ফরেন টেররিস্টস্ অ্যান্ড আদার ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড পাবলিক সেফটি থ্রেটস্’। অর্থাৎ, বিদেশি সন্ত্রাসী এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষার জন্য বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ।

সেখানে ১২টি দেশের নাগরিকদের প্রবেশে ওপর বিধিনিষেধ পুরোপুরি আরোপের কথা বলা হয়েছিল। দেশগুলো হলো - আফগানিস্তান, বার্মা বা মিয়ানমার, শাড, রিপাবলিক অফ দ্য কঙ্গো, ইকোয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন।

আর সাতটি দেশের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেগুলো হলো - বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা। গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে একজন আফগান নাগরিকের গুলিতে দুই ন্যাশনাল গার্ড সেনা গুরুতর আহত হওয়ার পর এক নারী সেনার মৃত্যু হয়। এর প্রেক্ষিতে এই ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন অভিযুক্ত রাহমানুল্লাহ লাকানওয়াল ২০২১ সালে একটি কর্মসূচির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।

ওই কর্মসূচি আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানদের জন্য বিশেষ অভিবাসন সুরক্ষা প্রদান করে। তবে বৃহস্পতিবার গ্রিন কার্ড পর্যালোচনা সম্পর্কে এডলোর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে স্পষ্টভাবে সেই হামলার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

এডলো বলেন, ‘এই দেশ এবং আমেরিকান জনগণের সুরক্ষা সর্বাগ্রে এবং আমেরিকান জনগণ পূর্ববর্তী প্রশাসনের বেপরোয়া পুনর্বাসন নীতির খরচ বহন করবে না।’ পুনরায় পর্যবেক্ষণ কেমন হবে ওই সম্পর্কে আর কোনো বিশদ বিবরণ ছিল না।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন বিভাগ বিবিসিকে জানায়, তারা যে জুন মাসের ঘোষণার কথা উল্লেখ করেছে, সেখানে বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ সীমিত করার লক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছিল। ওই ঘোষণায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী ও অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তা হুমকি’ থেকে রক্ষা করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

প্রশাসন জানায়, কোনো দেশকে তালিকাভুক্ত করার পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—সেই দেশের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ, ব্যবসা, ছাত্র ও পর্যটক ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও দেশে অবস্থান করে থাকা মানুষের হার।

ঘোষণায় আরো বলা হয়, আফগানিস্তান বর্তমানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণে, আর তালেবানকে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষভাবে চিহ্নিত বৈশ্বিক ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করে।

আফগানিস্তানে পাসপোর্ট ও সরকারি নথি ইস্যুর জন্য শক্তিশালী বা সহযোগিতামূলক কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ নেই এবং কার্যকর স্ক্রিনিং বা যাচাই ব্যবস্থা নেই।

গ্রিন কার্ড পুনরায় যাচাইয়ের আওতায় আসা অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে—বার্মা, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও লিবিয়া।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘এই হামলা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিকে সামনে নিয়ে এসেছে। আগের প্রশাসন ২ কোটি অজানা ও যাচাইবিহীন বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দিয়েছে। কোনো দেশই নিজের টিকে থাকার জন্য এমন ঝুঁকি মেনে নিতে পারে না।’

এর আগের সপ্তাহেই মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন বিভাগ সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় পাওয়া সব শরণার্থীর নথি পুনরায় যাচাইয়ের ঘোষণা দিয়েছিল। বুধবার যুক্তরাষ্ট্র আফগানদের সব অভিবাসন আবেদন প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সংস্থাটি জানায়, নিরাপত্তা ও যাচাই–সংক্রান্ত নিয়মগুলো পুনরায় পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।

সূত্র : বিবিসি

Link copied!