• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

টাইটানের পরিণতি নিয়ে টাইটানিক সিনেমার পরিচালক যা বললেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৩, ১১:২৪ এএম
টাইটানের পরিণতি নিয়ে টাইটানিক সিনেমার পরিচালক যা বললেন

আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী পর্যটকদের নিয়ে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিন টাইটানের বিস্ফোরণে আরোহীদের নিহত হওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিখ্যাত টাইটানিক চলচ্চিত্রের পরিচালক জেমস ক্যামেরন। টাইটান নিখোঁজের তথ্য জানার পরই তিনি সাবমেরিনটির পরিণতি বুঝতে পেরেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

হলিউড চলচ্চিত্র পরিচালক ক্যামেরন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তার এ অনুভূতির কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “যা ঘটেছে, আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। যখন সাবমেরিনটির ইলেকট্রনিকস ব্যর্থ হয়েছে, যোগাযোগ ব্যর্থ হয়েছে এবং একই সঙ্গে ট্র্যাকিং ট্রান্সপন্ডার ব্যর্থ হয়েছে, তার মানে সাবমেরিনটি আর নেই।”

সিনেমা বানানোর সুবাদে বিষয়টি ভালো করে বুঝতে ৩৩ বার মহাসাগরের তলদেশে গিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখে এসেছেন ক্যামেরন। টাইটানে থাকা পাঁচ যাত্রী নিখোঁজের বেলায় কয়েক দিন আগেই তিনি সবার মৃত্যু হতে যাচ্ছে বলে ধারণার কথা জানিয়েছিলেন।

এর আগে গত রোববার সাগরের তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা করে টাইটান নামের ডুবোজাহাজটি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরুর পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির। চার দিন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারীরা ডুবোজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানান। আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের পাশেই পাওয়া যায় টাইটান সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ। প্রথমে ‘ভয়ংকর বিস্ফোরণে’ ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ড। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন, “ধ্বংসস্তূপের যে চিত্র পাওয়া গেছে তা বিপর্যকর বিস্ফোরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

জেমস ক্যামেরন জানান, রোববার তিনি একটি নৌজাহাজে ছিলেন। টাইটান নিখোঁজ হওয়ার কথা সোমবার পর্যন্ত তিনি জানতে পারেননি। পরে যখন তিনি জানতে পারলেন যে সাবমেরিনটি যোগাযোগ ও তার নিজের গতিপথ দুটোই হারিয়ে ফেলেছে, তখনই ধারণা করেছিলেন এরই মধ্যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে গেছে।  

বিবিসিকে জেমস ক্যামেরন বলেন, “মনে হয়েছে, দীর্ঘ দুঃস্বপ্নের সময়ের মতো, যেখানে মানুষজন ছোটাছুটি করছে আর চিৎকার করে অক্সিজেন এবং এই সব নিয়ে শুধু কথা বলে যাচ্ছে। আমি জানতাম সাবমেরিনটি চূড়ান্ত গভীরতা ও অবস্থানের নিচে গিয়ে ঠেকেছিল। ঠিক সেই জায়গায়ই ওটাকে পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার যখন রিমোট কন্ট্রোলড সাবমেরিন মোতায়েন করা হলো, উদ্ধার অভিযানে নিযুক্তরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিংবা সম্ভবত কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেটি পেয়ে গেল।”

সাবমেরিনটির সন্ধানে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। উত্তর আটলান্টিকে যে অঞ্চলজুড়ে উদ্ধারকাজ চালানো হয়, তার আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের দ্বিগুণ। আরোহীরা বেঁচে আছেন বলে গতকালও আশা প্রকাশ করেছিলেন পরিবারের সদস্য ও উদ্ধারকারীরা। গত মঙ্গল ও বুধবার কানাডার উদ্ধারকারী দল আটলান্টিকের তলদেশ থেকে কিছু শব্দ শনাক্তের পর ওই আশা আরও জোরদার হয়েছিল

টাইটানিক জাহাজটি ১৯১২ সালে সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক আসার পথে একটি বরফ খণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এটি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় জাহাজ এবং প্রথম যাত্রাও তা শেষ করতে পারেনি। ওই দুর্ঘটনায় জাহাজে থাকা ২ হাজার ২০০ যাত্রী এবং ক্রুদের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৮৫ সালে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু হয়। ক্যামেরন ১৯৯৭ সালে ‘টাইটানিক’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছিলেন।

Link copied!