• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ৫ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ওবামা ৬টি মুসলিম দেশে ২৬ হাজার বোমা মেরেছিলেন: ভারতের অর্থমন্ত্রী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৩, ১০:২৩ এএম
ওবামা ৬টি মুসলিম দেশে ২৬ হাজার বোমা মেরেছিলেন: ভারতের অর্থমন্ত্রী

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার এ সফরকালে ভারতের সংখ্যালঘুদের অধিকার ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামা বলেন, যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য জাতিদের মানবাধিকার রক্ষা না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ভারত ভাগ হয়ে যেতে পারে।

ওবামার এমন মন্তব্যকে নিয়ে উপহাস করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময় পৃথক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

রোববার (২৫ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্মলা বলেন, “মুসলিমদের হয়ে কথা বলা এই ওবামাও কিন্তু ৬টি মুসলিমপ্রধান দেশে ২৬ হাজার বোমা মেরেছিলেন। আমি তো ওবামার মন্তব্যে স্তম্ভিত। প্রধানমন্ত্রী (মোদি) যখন আমেরিকায় ভারতের হয়ে প্রচার করছিলেন, মানে কথা বলছিলেন, ঠিক সেই সময়েই ভারতে মুসলিমদের নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি।”

এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে মোদির রাষ্ট্রীয় সফরের সময়, ওবামা সিএনএনকে বলেছিলেন, যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য জাতিদের মানবাধিকার রক্ষা না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ভারত ভাগ হয়ে যেতে পারে। বাইডেন প্রশাসনের উচিত ভারত সরকারের সঙ্গে সংখ্যালঘুদের অধিকারের ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা।

ওবামা বলেন, বৈঠকে বসলে ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের অবস্থানের বিষয়টি উত্থাপিত করা উচিত বাইডেনের। আমি মোদিকে নিজে চিনি। আমি যদি এই পরিস্থিতিতে তার সঙ্গে দেখা করতাম, তাহলে আমি তাকে বলতাম, আপনি যদি সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা না করেন, তাহলে ভারতের টুকরা টুকরা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন দেশ দুটির সম্পর্ককে আরও গভীর করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সফর করছেন তখন ওবামা এমন মন্তব্য করেছেন। অথচ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সিরিয়া থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে বোমাবর্ষণ করেছিলেন। কেন কেউ এই ধরনের লোকের অভিযোগ শুনবে?”

নির্মলা দাবি করেন, “আমরা আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। তাই এ ব্যাপারে আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করছি। কিন্তু তারপরেও ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কথা শুনতে হচ্ছে... আসলে মনে হচ্ছে ভারতের পরিবেশকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

আল-জাজিরা বলছে, মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলের অধীনে ভারতে মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। যদিও ভারত সরকারের দাবি তারা সব নাগরিকের সঙ্গে সমান আচরণ করছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন তিনি হোয়াইট হাউসে তাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় মোদির সঙ্গে মানবাধিকার এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারতে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয় না।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্ন: মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের অধিকার ও বাকস্বাধীনতা রক্ষায় আপনি কেমন পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক?’ সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে মোদি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “আমার সরকার ও আমাদের সংবিধান প্রমাণ করেছে যে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা সম্ভব। আমার প্রশাসনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে কোনো ক্ষেত্রেই কোনো বৈষম্যের স্থান নেই।”

দেশটির অর্থমন্ত্রী আরও দাবি করেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে যে ১৩টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ৬টি দিয়েছে মুসলিমপ্রধান দেশ। কোনো তথ্য ছাড়াই শুধু অপপ্রচারের জন্য নানা কথা বলা হচ্ছে। আসলে ভোটের মাধ্যমে মোদি ও বিজেপিকে হারাতে পারছে না কংগ্রেসসহ বিরোধীরা। সে কারণে এখনো এসব ভিত্তিহীন প্রচার করছে। গত কয়েকটি ভোটে কংগ্রেস এই ভূমিকা নিয়েছিল।”

Link copied!