পার্টি গেট কেলেঙ্কারির জন্য ২০২২ সালের ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ ঘটনার এক বছর হওয়ার আগেই এবার দেশটির পার্লামেন্টের সদস্য (এমপি) পদ থেকেও পদত্যাগ করেছেন তিনি।
শনিবার (১০ জুন) সিএনএন ও বিবিসি পৃথক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ বরিস জনসন ও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকের (বর্তমানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে, তারা কোভিড-১৯ লকডাউন চলাকালে ডাউনিং স্ট্রিটে একটি পার্টিতে অংশ নেন। দুজনকে এ ঘটনায় জরিমানাও করা হয়। ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রথম কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হন।
তাদের বিরুদ্ধে করা তদন্তে উঠে এসেছে, কোভিড কড়াকড়ির মধ্যে নিয়ম ভেঙে পার্টি করার বিষয়ে তিনি পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করেছেন। হাউস অব কমন্স থেকে বরিস জনসনকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
তবে এই তদন্ত কার্যক্রমকে তার অপসারণ চেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ব্রেক্সিটের প্রতিশোধ নিতে এবং তলে তলে মূলত ২০১৬ সালের গণভোটের ফল পাল্টে দিতে এসব আয়োজন চলছে।’
এক হাজার শব্দের বিবৃতিতে ঋষি সুনাক সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন বরিস জনসন। সরকারের বিরুদ্ধে ট্যাক্স বৃদ্ধি ও ব্রেক্সিট ঠিকঠাকমতো কার্যকর করে তুলতে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন বরিস। বরিস দাবি করেন, ওই প্রতিবেদন অসত্য ও পক্ষপাতে পরিপূর্ণ। কমিটি কোনো প্রমাণও হাজির করতে সক্ষম হয়নি যাতে প্রমাণ হয় যে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে হাউস অব কমনসকে (পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ) বিভ্রান্ত করেছেন।
তিনি বলেন, “আমি মিথ্যা বলিনি। কোভিড লকডাউনের সময় ডাউনিং স্ট্রিটে অনুষ্ঠানগুলো সামাজিক দূরত্ব মানা হয়েছে।”
করোনা মহামারীর সময় লকডাউনের বিধি ভেঙে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজ কার্যালয়ে একাধিক পার্টির আয়োজন করেন, যা ‘পার্টিগেট কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিত।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ বলেছে যে, তারা ‘পার্টিগেট’ কেলেঙ্কারির তদন্তের অংশ হিসাবে আইনের অন্তত ৫০টি লঙ্ঘন চিহ্নিত করেছে যার জন্য জনসন অভিযুক্ত হয়েছেন। বরিস জনসনকে ডাউনিং স্ট্রিটে লকডাউন নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য জরিমানাও করা হয়েছে। তিনিই হচ্ছেন প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যাকে আইন ভঙ্গ করায় জরিমানা করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :