বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, আঞ্চলিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য দূর করতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দুদিনের বেইজিং সফর করেন।
ব্লিঙ্কেনের এই সফরের লক্ষ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের লাইনগুলো পুনরায় চালু করা এবং বেলুন উড্ডয়নের ঘটনার পর থেকে যে সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তা স্থিতিশীল করা। সফরে এসব লক্ষ্য অর্জিত না হলেও কিছুটা অগ্রগতি হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছিল কিন্তু সেই ধারণাকে একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ব্লিঙ্কেনের এ সফরের ঠিক একদিন পর জো বাইডেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক বলে আখ্যায়িত করেছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ায় তহবিল সংগ্রহের একটি অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই মন্তব্য করেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে চীনা গুপ্তচর বেলুন ধ্বংসের ঘটনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং খুবই বিব্রত হয়েছিলেন বলেও দাবি করেন বাইডেন।
বুধবার (২১ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
বাইডেন বলেন, আমি সেই গুপ্তচর সরঞ্জামে ভরা বেলুনটিকে গুলি করে নামিয়ে এনেছিলাম। তিনি (জিনপিং) জানতেনই না, সেখানে এমনটি ঘটতে পারে। এটা স্বৈরশাসকদের জন্য বড় বিব্রতকর ব্যাপার। যখন তারা জানত না কি ঘটছে।
তবে চীন এখনো বাইডেনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে রয়টার্স বলছে, অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং শি জিনপিং সোমবার তাদের বৈঠকে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে স্থিতিশীল রাখতে সম্মত হয়েছেন যাতে এটি সংঘর্ষের দিকে না যায়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীনে এই বিরল সফরের সময় কোনো বড় অগ্রগতি করতে ব্যর্থ হয় উভয়পক্ষ।
অবশ্য সামনে দিনগুলোতে মার্কিন কর্মকর্তাদের আরও সফরের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে উভয় দেশ।
এর আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেই সোমবার বলেছিলেন, তিনি মনে করেন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সঠিক পথে রয়েছে।এমনকি ব্লিঙ্কেনের সফরের সময় সম্পর্কের অগ্রগতি হয়েছে বলেও সেসময় ইঙ্গিত দেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট।
বাইডেন মঙ্গলবার আরও বলেছেন, চারদেশীয় কৌশলগত নিরাপত্তা গোষ্ঠী কোয়াড নিয়ে উদ্বিগ্ন শি জিনপিং। এই জোটে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি আগে শি জিনপিংকে বলেছিলেন- কোয়াড দিয়ে চীনকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে না যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে আজ যুক্তরাষ্ট্র সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাইডেন দেখা করবেন এবং চীন ইস্যুটি এই দুই নেতার আলোচনার বিষয় হিসেবে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :