• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

সুদানে যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে সংঘর্ষে ১৮ বেসামরিক নিহত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৩, ১০:৩৬ এএম
সুদানে যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে সংঘর্ষে ১৮ বেসামরিক নিহত

সুদানে রক্তক্ষয়ী লড়াই বন্ধে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার এক দিন আগেই পশ্চিম সুদানের দক্ষিণ দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনী ও র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

আজ (২২ মে) সন্ধ্যা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে সৌদি আরবের জেদ্দায় গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই গ্রুপ।

সোমবার (২২ মে) তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে স্থানীয় চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, পশ্চিম সুদানের দক্ষিণ দারফুর অঞ্চলে সুদানি সেনাবাহিনী এবং র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) আধা সামরিক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

এক বিবৃতিতে সুদান ডাক্তার সিন্ডিকেট বলেছে, শনিবার প্রাদেশিক রাজধানী নিয়ালায় প্রথম যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল, তাতে দুজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া শহরজুড়ে ব্যাপক গোলাগুলির মধ্যে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে লড়াইয়ে কমপক্ষে ৮৫০ বেসামরিক লোক নিহত এবং ৩ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বেশ কয়েকটি পরিবার তাদের বাড়ি ছেড়ে শহরের বাইরে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার সৌদি আরবে আলোচনার পর সাত দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য দুই সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি সাত দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। উভয় পক্ষ সম্মত হলে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।

এর আগেও একাধিকবার যুদ্ধবিরতিতে গেলেও কোনো পক্ষই মেনে চলেনি। পাল্টাপাল্টি হামলার খবর পাওয়া যায়। ফলে ভেস্তে যায় যুদ্ধবিরতি। তবে এবারের চুক্তিটি মার্কিন-সৌদি এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা পর্যবেক্ষণ করবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

চুক্তিতে মানবিক সহায়তার কার্যক্রম, প্রয়োজনীয় পরিষেবা পুনরুদ্ধার, হাসপাতাল এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে বাহিনী প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন উভয় পক্ষকে চুক্তি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ চলাফেরা, সরকারি চাকরিজীবীদের দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল সুদান পরিচালনা করছে। মূলত কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোর মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। জেনারেল আল-বুরহান সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান। সে কারণে তিনিই দেশটির প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে দেশটির উপনেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো আধা সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফের কমান্ডার।

ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে গত ১৫ এপ্রিল সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও তার সাবেক উপপ্রধান মোহাম্মেদ হামদান দাগলোর বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘর্ষে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। গৃহহীন হয়েছে ১০ লাখের বেশি মানুষ।

Link copied!