ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বেরেলিতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ প্রচারাভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় আলেম ও ইত্তেহাদে মিল্লাত কাউন্সিলের প্রধান তৌকির রাজাকে শনিবার আটক করেছে পুলিশ। এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পুলিশের অভিযোগ, তৌকির রাজা ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ প্রচারাভিযানের সমর্থনে ভিডিওবার্তা দেন। এর পরপরই তার বাড়ির সামনে বিপুলসংখ্যক লোক জড়ো হয় প্রচারাভিযানের সমর্থনে। ভিড় ক্রমেই বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেরেলিতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে বিপুলসংখ্যক মুসলিম ও ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। কর্মকর্তারা জানান, বিক্ষোভকারীরা পাথর নিক্ষেপ করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে।
প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, তৌকির রাজার বাড়ির সামনে ভিড় জমে গেছে। তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন এবং হাতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। এ ঘটনায় অন্তত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৫০ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা, দাঙ্গা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগে ১ হাজার ৭০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
‘আই লাভ মুহাম্মদ’ পোস্টারকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া উত্তেজনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার নামাজের পর উত্তর প্রদেশের মৌ জেলাতেও বিক্ষোভ হয়। সেখানে লোকজনকে বাড়ি ফিরে যেতে বললে কিছু বিক্ষোভকারী পাথর ছোড়ে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে।
‘আই লাভ মুহাম্মদ’ বিতর্কের সূত্রপাত ৪ সেপ্টেম্বর, ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিলের সময়। কানপুরে মিছিলের পথে একটি তাবুতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ লেখা পোস্টার ঝোলানো হয়েছিল। স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলো অভিযোগ তোলে, ওই জায়গাতেই রামনবমীর মতো হিন্দু উৎসব হয়। তাই এই পোস্টার ইচ্ছাকৃতভাবে দেওয়া হয়েছে।
এরপর থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হিন্দু সংগঠনগুলোর দাবি, তাঁদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে মুসলিমরা অভিযোগ করেন, নবীজির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করায় তাঁদের টার্গেট করা হচ্ছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। টুইটারে #ILoveMuhammad হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করতে শুরু করে।