বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার জেরে ভারতের ত্রিপুরায় মসজিদ ও সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর হামলার পর নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে রাজ্যে। বৃহস্পতিবারের এসব হামলার বিস্তারিত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য জামিয়ত উলামা (হিন্দ)।
জামিয়ত উলামার নেতারা উদ্বেগ জানিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, গত তিন দিন ধরেই মসজিদ ও মুসলিমদের বাড়িতে হামলা হচ্ছে। বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও পূজা মণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত থেকে মসজিদে হামলা চালায় কয়েকটি হিন্দু সংগঠন।
ত্রিপুরা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বেশকিছু স্থানে ‘বিপথগামী’ লোকজন গোলযোগ করেছে তবে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মত বড় কোন ঘটনা ঘটেনি। এসময় আগরতলায় একটি মসজিদে ভাঙচুরের তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেন, “আমরা প্রায় ১৫০ টি মসজিদে নিরাপত্তা দিচ্ছি। পুলিশ হামলার ঘটনা তদন্ত করছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে।”
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিতে পুলিশের মহাপরিচালক ভি এস যাদব ও ত্রিপুরা জামিয়তের সভাপতি মুফতি তায়েবুর রহমান বলেন, রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে একটি গোষ্ঠী।
তায়েবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “ত্রিপুরার হিন্দু বা মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউই (বাংলাদেশের) সাম্প্রদায়িক হামলাকে সমর্থন করে না। আমরা এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ভিসা অফিসেও প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের সহিংসতার জেরে গোমতি জেলার উদয়পুরে ভিএইচপি ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চের কর্মীরা বিক্ষোভ করে। এসময় সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জনেরও বেশি আহত হন। আয়োজকদের দাবি, তাদের সমাবেশের অনুমতি রয়েছে কিন্তু তারা সংখ্যালঘু এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
একই দিনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তর ত্রিপুরা জেলার আগরতলা ও ধর্মনগরে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আগরতলায় শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বাতিল করা হয়।
অন্যদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় আরএসএস নেতা অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সন্দেহ করছি কিছু লোক আমাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ করে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে।”