• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

আল-আকসায় ইসরায়েলের হামলা, ১৫২ ফিলিস্তিনি আহত


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২২, ০২:৩০ পিএম
আল-আকসায় ইসরায়েলের হামলা, ১৫২ ফিলিস্তিনি আহত

পূর্ব জেরুজালেমে দখলকৃত আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। সহিংসতার সময় অন্তত ১৫২ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

আল-আকসার পরিচালনাকারী ইসলামিক এনডোমেন্ট জানিয়েছে, শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোরের আগে ইসরায়েলি পুলিশ বাহিনী মসজিদে প্রবেশ করে। কারণ হাজার হাজার মুসল্লি ভোরে নামাজের জন্য মসজিদে জড়ো হয়েছিল।

আল-জাজিরা বলছে, সহিংসতার সময়ের কিছু ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে অনলাইনে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের ওপর ঢিল ছুড়ছে ফিলিস্তিনিরা। তাদের প্রতিহত করতে টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। 

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জরুরি পরিষেবা অভিযোগ করেছে, তারা বেশির ভাগ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তবে এ সময় অ্যাম্বুলেন্স ও প্যারামেডিকদের মসজিদে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সে সময় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি মসজিদের ভেতরে আহত অবস্থায় আটকে ছিল।

এনডাউমেন্ট জানায়, ঘটনাস্থলের একজন প্রহরীর চোখে রাবার বুলেট দিয়ে গুলি করা হয়।

ইসরায়েলি পুলিশ বলছে, ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান ও ইহুদিদের মাউন্ট হিসেবে পরিচিত এই স্থান। সকালে প্রার্থনা শেষে একটি ‘হিংসাত্মক‍‍’ ভিড় জমে। সেটা ভাঙার জন্য তারা ভেতরে প্রবেশ করে।

তাদের দাবি, এই পবিত্র স্থানে ফিলিস্তিনিদের একটি দল পশ্চিম প্রাচীরের নিকটবর্তী ইহুদি প্রার্থনা স্থানের দিকে ঢিল ছুড়েছিল। ফিলিস্তিনারা ঢিল ছোড়া শুরু করার পরে তারা ভিড়কে ‘ছত্রভঙ্গ করতে ও পেছনে ঠেলে দিতে’ প্রবেশ করেছিল।

দামেস্ক গেট থেকে আল-জাজিরার প্রতিনিধি নাজওয়ান আল-সামরি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী অজুহাত ছাড়াই আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়েছে। সকালের প্রার্থনার পরে কিবলি প্রার্থনা হলের কাছে উপাসকদের ওপর হামলা করেছে তারা।’

তিনি আরও বলেন, “এই উত্তেজনাটি ঘটেছে যখন ডানপন্থী ইহুদি গোষ্ঠীগুলো ইহুদি পাসওভারের ছুটির সময় আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে অভিযান চালানোর আহ্বান জানিয়েছিল। এর আঙিনায় পশু বলি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল, যা প্রাচীনকাল থেকে ঘটেনি।”

আল-আকসা মসজিদের পরিচালক শেখ ওমর আল-কিসওয়ানি প্যালেস্টাইন টিভিকে বলেন, “ইসরায়েলি পুলিশ ৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।”

রয়টার্স বলছে, এই অপরাধ ও এর পরিণতির জন্য সম্পূর্ণ এবং সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইন রয়টার্সকে বলেন, “আল-আকসা মসজিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। এখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়া রোধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”

গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি ইসলামি গোষ্ঠী হামাস বলছে, “ইসরায়েল পরিণামের দায় বহন করবে।”

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ইসরায়েল বেআইনিভাবে দখলকৃত পশ্চিম তীরে গ্রেপ্তার ও সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনিদের একের পর এক মারাত্মক আক্রমণ শুরু হয়। যার মধ্যে বুধবার থেকে সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গত বছর রমজানে আল-আকসায় সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভ ও অভিযান হয়। যা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১১ দিনের হামলায় পরিণত হয়।

সে সময় কমপক্ষে ২৬০ ফিলিস্তিনি ও ১৩ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। 

Link copied!