অতিরিক্ত রাগের বশে আমরা ভুল কাজ করে ফেলি। এর ফলে পারিবারিক শান্তি নষ্ট হয়। পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও দুর্দশা নেমে আসে। তবে খারাপ লাগলেই যে রাগে ফেটে পড়তে হবে, তা কিন্তু নয়। বরং ঠান্ডা মাথায় যেকোনো সমস্যার সমাধান দ্রুত করা সম্ভব।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মারামারি, ভাঙচুর বা রাগ দেখানো অনেক সময় মানসিক রোগের সাধারণ উপসর্গ। এসব মানসিক রোগের মধ্যে আছে বাইপোলার এ্যাফেকটিভ ডিজঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া বিষণ্ণতা, ব্যক্তিত্বের সমস্যা ইত্যাদি। অনেক সময় ব্যক্তি নিজেও বুঝতে পারেন যে তার রেগে যাওয়াটা ঠিক স্বাভাবিক নয়। কিন্তু তিনি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেন না। এ মানসিক রোগকে হঠাৎ রেগে যাওয়া বা ইন্টারসিটেন্ট এক্সপ্রেসিভ ডিজঅর্ডার বলে।
- মানসিক অবসাদ হলো রাগের প্রথম কারণ। এই অসুখের কারণে টানা হতাশা, দুঃখ আসতে পারে। এমন অবস্থায় খুব বেশি দিন থাকলে কথায় কথায় রাগ এবং অভিমান, দুই-ই হতে পারে।
- অতিরিক্ত রেগে যাওয়ার লক্ষণ আরও ইঙ্গিত দেয় বাইপোলার ডিজঅর্ডারের। এই অসুখ থাকলে খানিক পরপরই মনের ভাবে পরিবর্তন আসে। অতিরিক্ত আনন্দের মধ্যেও থাকে রাগের অনুভূতি।
- মাদকাসক্ত ব্যক্তিরাও অনেক সময় অতিরিক্ত রাগী প্রকৃতির হয়ে থাকেন। এর কারণ হলো অতিরিক্ত মাদকদ্রব্য শরীরের প্রবেশ করলে হিংস্র ভাব তৈরি করে। চিন্তাশক্তির ওপরে মাদকের প্রভাবই এমন করে বলে মত মনোরোগ চিকিৎসকদের।
রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে
- সবার আগে বোঝার চেষ্টা করুন, কী কারণে রেগে যাচ্ছেন। রাগের উৎস বুঝতে পারলে তা নিয়ন্ত্রণ করা তুলনায় সহজ।
- হঠাৎ খুব রাগ হয়ে গেলে জোরে জোরে বড় বড় শ্বাস নিতে থাকুন। যতক্ষণ না মন স্থির হয়, ততক্ষণ এভাবেই শ্বাস নিতে থাকুন।
- নিজের সঙ্গে কথা বলা শুরু করুন। নিজেকে বোঝান যে এভাবে রাগ করতে থাকলে আদতে আপনারই সমস্যা বাড়বে।
- নিয়মিত যোগব্যায়াম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে রাগের অনুভূতি।
- হঠাৎ কোনো কারণে রেগে গেলে কারও সঙ্গে চেঁচামেচি না করে শরীরচর্চা করতে পারেন।
- কথা বলার আগেই ভাবুন। একটু সময় নিয়ে কথা বলার অভ্যাস করুন।
- সমস্যায় বিচলিত না হয়ে শান্ত মস্তিষ্কে সমাধান খুঁজুন।
- পরিবারের কারও ওপর রাগ-ক্ষোভ হলে তার সামনে না গিয়ে একাকী সময় কাটান।
- ব্যস্ততার ফাঁকেও অবসর সময় কাটান। ভালো লাগার কাজগুলো করুন।