• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

চিত্রনায়ক ফারুককে যে কারণে ‘মিয়া ভাই’ ডাকা হতো


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩, ০৮:১১ পিএম
চিত্রনায়ক ফারুককে যে কারণে ‘মিয়া ভাই’ ডাকা হতো

অনন্তলোকে এখন বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকপ্রিয় নায়ক আকবর হোসেন পাঠান ওরফে ফারুক। সিনেপাড়ায় এ নায়ককে ডাকা হতো ‘মিয়া ভাই’ নামে। কেন এমন নাম? এর কারণ মৃত্যুর আগে একটি গণমাধ্যমকে বলে গেছেন এ চিত্রনায়ক।

এ বিষয়ে তার ভাষ্য ছিল, “‘লাঠিয়াল’ সিনেমা থেকে তার এ নামকরণ। সেখানের একটি দৃশ্যে আনোয়ার হোসেন ছিলেন আমার বড় ভাই। গল্পের একটি পর্যায়ে তিনি মারতে থাকেন আমাকে। মার খেতে খেতে আমার মনে হয় যে সে আমাকে এভাবে মারছে এটা তো অন্যায়। তখন সংলাপ অনুযায়ী চিৎকার দিয়ে বলে উঠি ‘মিয়া ভাই…’। আর আমার সে চিৎকারে সে থমকে যায়। লাঠিটি ফেলে সে চলে যায়। এরপর থেকেই মূলত ‘মিয়া ভাই’ নামটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। সবাই ‘মিয়া ভাই’ বলে ডাকতে শুরু করে। আমি তখন বুঝতাম না কেন সবাই ‘মিয়া ভাই’ বলে ডাকে। তবে এটার কারণটা হলো বিচার-আচার, কারো দুঃখ, কাউকে সাহায্য করা এগুলোর জন্যই মূলত ‘মিয়া ভাই’ বলে ডাকত। ‘মিয়া ভাই; ডাকটি বড় অন্তরের ডাক, বড় হৃদয়ের ডাক।”

মৃত্যুর আগে চিত্রনায়ক ফারুক এই ‘মিয়া ভাই’ নামটির জন্য গর্ব বোধ করতেন। একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলে গেছেন, “মাঝে মাঝে একটা কথা মনে হলে খুব আনন্দ হয় এবং সেই সঙ্গে কষ্টও পাই। সেটি হলো, যখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব তখন অনেকেই বলবে ‘মিয়া ভাই’ আর থাকলো না। এ বিষয়টি যেমন আনন্দ দেয় ঠিক তেমনি কষ্টও দেয়। কষ্ট দেয় কারণ সবাইকেই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে।”

সোমবার (১৫ মে) সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিয়াভাই’ খ্যাত এই অভিনেতা মারা গেছেন। 

ফারুকের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জে। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নাম আকবর হোসেন পাঠান হলেও তিনি সবার কাছে ফারুক নামে পরিচিত। বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতির পাশাপাশি নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।

১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ফারুকের। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমণি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাইসহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

১৯৭৫ সালে লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক তরুণ বয়স থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Link copied!