• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তিন ঘণ্টা আটকে জবি ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৩, ০৯:৫৩ পিএম
তিন ঘণ্টা আটকে জবি ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিন ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের একাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম হাফসা বিনতে নূর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ১২০৩ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তন্বী, ইশিতা, ফাল্গুনী আক্তার, নিনজা শিকদার, ইরা ও নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারী।

এ ঘটনার পর বুধবার (১৭ মে) হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

উপাচার্যকে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হলের নিজেদের কক্ষের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগী হাফসা বিনতে নূরের সঙ্গে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের কথার কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রেবেকা খাতুন হলের অন্য কক্ষের আবাসিক ছাত্রীদের নিয়ে এসে রুম আটকে হাফসাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করে। প্রায় তিন ঘণ্টা যাবৎ নির্যাতনের পর হাফসা বিনতে নূর অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাশের কক্ষের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, “আমার পাশের রুম হওয়ায় আমি এসে হাফসাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যেতে চেয়েছি। কিন্তু রেবেকা, নিনজা, ফাল্গুনীসহ সকলে তাকে ঘেরাও দিয়ে ধরে যেন সে আসতে না পারে। এক পর্যায়ে সে মোবাইল নিতে গেলেও তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।”

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাফসা বলেন, “আমাদের রুমের রেবেকা খাতুনের সঙ্গে রুম পরিস্কার করা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সে হলের অন্য রুমের ৭ থেকে ৮ জন মেয়েকে নিয়ে আমাকে শারীরিক মানসিকভাবে নির্যাতন করে। তারা সকলে মিলে রাত সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত আমার ওপর এ নির্যাতন চালায়। এ সময় নিনজা শিকদার নামের এক মেয়ে পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে।

হাফসা আরও বলেন, “আমাদের সহকারী হাউজ টিউটর মানসুরা বেগম আসার পরও তারা থামেনি। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। শুধু তাই নয়, এই রেবেকার কর্মকাণ্ডে আমাদের অন্যান্য রুমমেটরাও শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোয়ারী বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমি ম্যামকে সঙ্গে নিয়ে ওদের রুমে যাই। আমি গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসা আপুকে মারধরের বিষয় আমি কিছু জানি না। আমি ওদের রুমে ম্যামকে রেখে নিচে চলে আসি।”

হলের সহকারী হাউজ টিউটর মানসুরা বেগম বলেন, “তুচ্ছ ঘটনার জেরে আবেগের বশবর্তী হয়ে এ কলহের সূত্রপাত ঘটেছে। অবস্থা বেগতিক জেনে আমি সেখানে উপস্থিত হই। আমি যাওয়ার পরও তারা আক্রমণাত্বক ছিল। হাফসাকে তারা রুমের বাইরে যেতে ও ফোনটাও ধরতে দিচ্ছিল না। মূলত অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে আসার কারণেই এ ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়িয়েছে। আমি সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করার পরও তারা আমার সামনে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে।”

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে হলে এমন ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ঘটনায় আমি শঙ্কিত। আজ অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দুপক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। এরপর থেকে যদি কেউ এ রকম কাজের সঙ্গে জড়িত হয় তাহলে তাদের সিট বাতিল হবে।”

Link copied!