• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খাতায় রোল-রেজিট্রেশন নম্বর চান না শিক্ষার্থীরা


জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
খাতায় রোল-রেজিট্রেশন নম্বর চান না শিক্ষার্থীরা
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি : সংগৃহীত

সেমিস্টার পরীক্ষার খাতায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আইডি নম্বর থাকালে খুব সহজে জানা যায় কোন শিক্ষার্থীর খাতা কোনটি। ফলাফলের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সেমিস্টার পরীক্ষায় নম্বর টেম্পরিংয়ের অভিযোগ তুলেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকায় খাতা দেখার সময় পক্ষপাতিত্ব হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪টি বিভাগের প্রতিটি বিভাগেই পরিক্ষা হয় সেমিস্টার পদ্ধতিতে। এ পদ্ধতিতে পরীক্ষার খাতার ওপরে শিক্ষার্থীদের রোল আর রেজিষ্ট্রেশন নম্বর লিখতে হয়। ২০২২ সালে ফোকলোর বিভাগের (স্নাতকোত্তর ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) চার শিক্ষার্থী একই বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ তুলেছিলেন । বিভাগের  সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহর বিরুদ্ধে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তারা।

এর আগে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগ প্রধান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামের নামে নম্বর কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের কাছে অভিযোগ দেন । এ অভিযোগে খাতা পুনঃমূল্যায়ন করেও সমাধান আসেনি। পরে উচ্চ আদালত পর্যন্ত ঘটনা গড়ায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “দুই-একটা বিভাগের নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু আরও অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরাই এর ভুক্তভোগী। বিভিন্ন কারণে এসব বিষয় সামনে আনা যায় না। তাই রোল নম্বরহীন খাতায় পরীক্ষা হওয়া দরকার। তবেই মেধার সঠিক মূল্যায়ন হবে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী বলেন, “বর্তমান সিস্টেমে শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বা কোন্দলের প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরে পড়ে। কোনো বিষয়ে দুর্বলতা থাকলে সেগুলো কোনো শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ আমরা পাই না। অন্য শিক্ষক নম্বর কমিয়ে দিবে সেই আশংকা থাকে। শিক্ষকদের নিজেদের রাজনীতিতে আমাদের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ে যায়।”

বিষয়টি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি। পরিক্ষা পদ্ধতি আপডেট এবং উন্নত করার বিষয়টি পরিকল্পনায় আছে।” খাতায় কোডিং সিস্টেম চালু করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, অবকাঠামো ও জনবল এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, “আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর, পরীক্ষা পদ্ধতি, রেজাল্ট দেওয়া, সার্টিফিকেট সবকিছু আধুনিক ও ডিজিলাইজেশন করার উদ্যোগ নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলমান আছে। খাতার বিষয়টি স্মার্ট করা পরিকল্পনা আমাদের থাকবে। আমরা পরীক্ষা পদ্ধতি ত্রুটিমুক্ত করার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

Link copied!