• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জান্নাতুলের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন জয়


নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২২, ০২:৩৭ পিএম
জান্নাতুলের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন জয়
জান্নাতুল মাওয়া কলি

ছোটবেলা থেকেই জান্নাতুল মাওয়া কলির স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার। শিক্ষা জীবনের শুরুর সময় থেকে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন বুনে বড় হয়েছেন। কলেজের পাট চুকিয়ে পেয়ে যান ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ। ভর্তি হন উপকূলের বিদ্যাপীঠ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। আরও যত্নসহ বুনতে শুরু করেন শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন।

সাফল্যের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। তবু স্বপ্ন বাস্তবায়নে কলির পথচলা থেমে থাকেনি। নিজের অদম্য ইচ্ছার সঙ্গে যোগ হয় এবার জীবন সঙ্গীর অকুণ্ঠ সমর্থন। নতুন সংসারকে গুছিয়ে নেওয়ার গুরু দায়িত্ব নিজেই কাঁধে নিয়ে নেন তার স্বামী মো. জাহিদুল আলম। কলির শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নের কথা জানতেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে পরিচিত জীবনসঙ্গী জাহিদুল। শুরু থেকেই স্বপ্ন ছুঁতে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে পাশে থাকেন তিনি। স্নাতকোত্তরের ফলাফল পেয়ে আর কালক্ষেপণ করতে হয়নি কলির। মাত্র আট মাসের মাথায় স্বপ্ন জয় করে হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। যোগদান করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক পদে।

কলি জানান, মা-বাবার দোয়া ও অর্ধাঙ্গের নিরলস সহায়তাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন জয় সম্ভব হয়েছে। শিক্ষক হয়ে এখন তার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কলি আরও বলেন, “আসলে আমার আব্বু আম্মু দুজনেই শিক্ষক। আত্মীয় স্বজনও অনেকে এই পেশায় আছেন। তখন থেকেই একটা ভালো লাগা কাজ করতো। সেই দশম শ্রেণিতে যখন পড়তাম, তখনই জীবনের লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হব। তখন এটাও জানতাম না প্রফেসর হওয়ার জন্য কী যোগ্যতা লাগে। জীবনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ার অনুভূতি আসলে সবসময়ই অবিশ্বাস্য মনে হয়।”

সংসার সামলাতে স্বামী সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়ায় পথচলা সহজ হয়েছে বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কলি। তিনি বলেন, “নতুন পরিবেশ, নতুন পরিবার আমার জন্য ব্যাপারটা ভয়ের ছিল। কিন্তু সে কখনো আমাকে কোন কিছু চাপিয়ে দেয়নি। গাইড করে গেছে সবসময়, কোনটা কীভাবে করতে হবে। সংসারে যা পারিনি তা শিখিয়ে দিয়েছে। আমার লক্ষ্যের কথা জানতো সে, তাই সেভাবে পড়ার জন্য নিয়মিত গাইড করে গেছে। আমার সঙ্গে নিজেও পড়েছে যেন আমি পড়তে আগ্রহ পাই। একসঙ্গে পরীক্ষাও দিয়েছিলাম ড্যাফোডিলে। কম্পিউটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্টে ওর ভাইবাতেও ডাক এসেছিল, কিন্তু সেদিন ওর অফিসে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় ছুটি নিতে পারেনি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়রদের উদ্দেশ্যে জান্নাতুল মাওয়া কলি বলেন, “আমি মনে করি লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, নিজের চেষ্টা আর আল্লাহর দয়ায় চাইলে সবকিছুই সম্ভব। যে যা ইচ্ছা বলুক, যত ধরনের খারাপ কথা কানে আসুক না কেন, প্রতিবন্ধকতা আসুক না কেন, সব বাদ দিয়ে নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকলে একসময় ঠিকই সব সুন্দর হবে।”

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর

Link copied!