• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাবিতে নতুন ভবন নির্মাণ, ৫০০ গাছ কাটা পড়ার শঙ্কা


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩, ০৬:৫৯ পিএম
জাবিতে নতুন ভবন নির্মাণ, ৫০০ গাছ কাটা পড়ার শঙ্কা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) ভবন নির্মাণে পাঁচ শতাধিক গাছ কাটা পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানা সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় আট বিঘা জমিতে ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনক, (আইবিএ) বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটে ছয় বিঘা ও ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএসকে ছয় বিঘা জমি একাডেমিক ভবন নির্মার্ণের জন্য দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন। আইবিএ নিজস্ব অর্থায়নে তাদের এ ভবন নির্মাণ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সিমান্ত বর্ধন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই যত্রতত্র গাছ কেটে ভবন নির্মাণ করছে। এর আগেও টারজান পয়েন্টের গাছ কাটা হয়েছে। আমরা জানি অনেক বিভাগের ক্লাসরুম সংকট রয়েছে। এই ক্লাসরুম সংকট সমাধানের জন্য বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নতুন লেকচার থিয়েটার হল হচ্ছে। পুরাতন ও পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙে সেখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা যায় কিন্তু প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই ভবন তৈরি করতে গাছ কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণবন্ত পরিবেশ ধ্বংস করছে। অবিলম্বে এই ভবন অন্যত্র সরিয়ে নিতে আহ্বান করছি।”

পরিবেশবাদী সংগঠন ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারর্ভেশন ফাউন্ডেশনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সংরক্ষিত বনাঞ্চল নেই। এখানে উন্নয়ন প্রকল্প হবে, গাছ কিছু কাটা হবে স্বাভাবিক। তবে কোথায় ভবন নির্মাণ করলে কম গাছ কাটা হবে, কোথায় ভবন নির্মাণ করলে জীববৈচিত্র্যের সবচেয়ে কম ক্ষতি হবে এ বিষয়গুলো প্রশাসনের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত ছিল। আইবিএ ভবন যেখানে নির্মাণ করতে চাচ্ছে সেখানে জীববৈচিত্র্য অনেক সমৃদ্ধ। কিন্তু প্রশাসন জীববৈচিত্র্য নিয়ে ভেবেছেন কিনা তা আমরা জানি না ।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফসানা হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মাস্টারপ্লান নেই। মাস্টারপ্লান হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথায় ভবন নির্মাণ করা যাবে, আর কোথায় যাবে না বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যেত৷ মাস্টারপ্লান ছাড়া ভবন নির্মাণ অপরিকল্পিত। মাস্টারপ্লান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান হতো।”  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ভবন নির্মার্ণের জন্য আমাদের ওই জায়গা দেওয়া হয়েছে। আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্যের দিকে খেয়াল রেখে আমাদের এই জায়গা দেওয়া। আর এখানে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের খুব বেশি জায়গা লাগবে না। আট বিঘা আমাদের দেওয়া হয়েছে৷ তবে পুরো আট বিঘার উপর আমাদের ভবন হবে না। আমরা কিছুটা ফাঁকা জায়গায় আমাদের ভবন করব। যেখানে খুবই অল্প গাছ কাটার প্রয়োজন পড়বে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম বলেন, “আমি আইবিএ কতৃপক্ষকে বলেছি যাতে  ভবন নির্মান করতে গাছ না কাটতে হয়।” 

Link copied!