রাজবাড়ী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত শেখের বিরুদ্ধে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দেবজ্যোতি নাগকে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় দেবজ্যোতি নাগ বাদী হয়ে সভাপতি রাহাত শেখসহ ছয়জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
দেবজ্যোতি নাগ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্রবিষয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাড়ি শহরের বিনোদপুরের ভাজনচালা এলাকায়। অভিযুক্ত সভাপতি রাহাত শেখ রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে রাজবাড়ী সরকারি কলেজের পুকুর পাড়ে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত শেখের অনুসারীরা মাদক সেবন করছিলেন। এ সময় সাব্বির শিকদার ও সোয়েব হাসান মুন তাদের বাধা দেন। এতে করে নাহিদ পুকুর পাড়ে থাকা বাঁশের লাঠি এবং মেহেদী হাসান গাছের ডাল দিয়ে সাব্বির ও সোয়েবকে মারধর করতে থাকেন।
আরও জানা যায়, বিষয়টি জানতে পেরে দেবজ্যোতি ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও মারধর করে তারা। এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দেবজ্যোতির গলায় থাকা সোনার চেন, সাব্বির ও মুনের কাছে থাকা ফোন ছিনিয়ে নেয় নাহিত ও সাব্বির। তাদের খুন করে লাশ গুম করার এবং মামলা করলে বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
দেবজ্যোতি নাগ বলেন, “সভাপতির অনুসারীরা কলেজে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করে আসছে। আমি বারবার সভাপতিকে বিষয়টা জানিয়েছি। সভাপতি কোনোভাবে বিষয়টি আমলে নিই নাই।”
দেবজ্যোতি নাগ আরও বলেন, “এই মিরাজ কলেজের ছাত্র নাকি বহিরাগত, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। সভাপতি কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ করিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করতে চাচ্ছে। এই সিন্ডিকেট মাদক সেবন ছাড়াও ছিনতাই এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছে।”
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত শেখ বলেন, “রোববার ছিল আমার জন্মদিন। জ্যোতি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। তাকে মারধর করার বিষয়টি সঠিক নয়। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।”
রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “কলেজের পুকুর পাড়ে এ রকম একটি ঘটনাটি ঘটেছে। দুজনই আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে দুজনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।”
রাজবাড়ী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইফতেখার আলম জানান, “রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”