গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে নদী পাড়ের ঘর-বাড়িসহ হাজারো স্থাপনা। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় নদীর তীরবর্তী জমিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
এদিকে তীব্র ভাঙন ঝুঁকির মধ্যেও নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন ও আনলোড করা হচ্ছে। এতে নদী তীর রক্ষার জন্য যে জিওব্যাগ ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলোও বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ফেরীঘাট, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া, চিতুলিয়াপাড়া, খানুরবাড়ি, নিকরাইল ইউনিয়নের কোনাবাড়ী, মাটিকাটা, সিরাজকান্দি, সারপলশিয়া ও অর্জুনা ইউনিয়নের জগৎপুড়া, কুঠিবয়ড়া, রায়ের বাশালিয়া ও বলরামপুরসহ প্রায় অর্ধশত গ্রামে যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু, ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের গাইড বাঁধের কাছে ড্রেজার বসানো হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় বালু উত্তোলন।
এতে হুমকিতে রয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা ও আধাপাকা সড়ক, ঘর-বাড়ি, মসজিদ-মন্দির, ছোট বড় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। তাই ভাঙন ঠেকাতে নদীতে ড্রেজার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
চিতুলিয়াপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোক বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হলেও প্রতিবাদ করা যায় না। অনেকে টাকার লোভে বালু ব্যবসায়ীদের কাছে জমি ইজারা দিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। আবার কেউ জমি না দিলে জোরপূবর্ক জমি দখল করে অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, “যমুনা নদীতে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ওইসব এলাকার কিছু কিছু স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। তাছাড়া এমপি মহোদয় ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।”
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন জানান, উপজেলার যমুনা নদীর তীরে গাইড বাঁধের কাছে বালু আনলোড করার বিষয়ে জেনেছি। ভাঙন রোধে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যমুনা নদীর তীরে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।