• ঢাকা
  • সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২০ জ্বিলকদ ১৪৪৬

জার্মানির পতাকা প্রদর্শন করে সেই বৃদ্ধের চমক


মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২২, ০৩:৩২ পিএম
জার্মানির পতাকা প্রদর্শন করে সেই বৃদ্ধের চমক

সাড়ে ৭ কিলোমিটার জার্মাানির পতাকা প্রদর্শন করেছেন মাগুরা সদর উপজেলার ঘোড়ামরা গ্রামের ৭০ বছর বয়সী আমজাদ হোসেন। এটাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় পতাকা বলে দাবি করেছেন তিনি।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জার্মান ফুটবল দলের সমর্থক আমজাদ হোসেন সদরের নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে এ পতাকা প্রদর্শন করেন।

২০০৬ সালে প্রথম তিনি দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জার্মানির পতাকা তৈরি করেন। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের সময় পতাকার দৈর্ঘ্য বাড়ান আড়াই কিলোমিটারে। ২০১৪ সালে আরও এক কিলোমিটার বাড়িয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার করা হয়। সবশেষ ২০১৮ সালে পতাকার দৈর্ঘ্য বাড়ান পাঁচ কিলোমিটারে।

জানা গেছে, পতাকা বানানোর জন্য দরিদ্র কৃষক আমজাদ তার বাড়ির তিন শতক জমি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। এবার কাতার বিশ্বকাপ উপলক্ষে সেই পতাকার দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে সাড়ে সাত কিলোমিটার করা হয়েছে। নতুন করে দুই কিলোমিটার পতাকা বানাতে তার খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।  

২০১৪ সালে জার্মান রাষ্ট্রদূত মাগুরায় তার বাড়িতে এসে আমজাদের পতাকা উদ্বোধন করেন। সেই সময় তাকে জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জার্মান ফুটবল দলের ফ্যান ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয়।

এ বিষয়ে আমজাদ জানান, তিনি একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। জার্মানির ওষুধ খেয়ে সেই রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এরপর থেকে তিনি জার্মানির ভক্ত। একইভাবে জার্মান ফুটবল দলকেও তিনি ভালোবাসেন। এই ভালোবাসা থেকে জার্মান দলের সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়ে তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটান।

৭০ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ আরও জানান, এবার নতুন দুই কিলোমিটার পতাকা তৈরি করতে ইতোমধ্যে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে কাপড়ে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। দর্জি ও অন্যান্য বাবদ খরচ পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এবার কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জার্মান দল চ্যাম্পিয়ন হলে তিনি নিজ বাড়িতে কয়েক শ লোকের ভোজ দেওয়াসহ গোটা পতাকা নিয়ে মাগুরা শহরে মিছিল করবেন বলে পরিকল্পনা রয়েছে তার।

মাগুরা ফুটবল একাডেমির পরিচালক সৈয়দ বারিক আনজাম বার্কিসহ স্থানীয়রা বলেন, “আমজাদ জার্মান-পাগল মানুষ। দরিদ্র কৃষক হলেও বিশ্বকাপ ফুটবল এলে তিনি জার্মানির দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে চমক সৃষ্টি করেন। প্রতিবছর তার পতাকার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়। এ জন্য তিনি নিজের জমি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।”

স্থানীয় চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, “আমজাদ ২০১০ সাল থেকে জার্মানির পতাকা তৈরি করে আসছেন। এ বছর  সাড়ে সাত কিলোমিটার পতাকা তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছেন। এ জন্য বিশ্বে বাংলাদেশসহ তার নিজ এলাকা পরিচিতি লাভ করছে। বিগত দিনে তিনি এ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জার্মানির রাষ্ট্রদূতকে আমাদের এলাকায় নিয়ে আসেন। যে কারণে আমজাদ আমাদের এলাকার গৌরব।”

Link copied!