• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের কামাররা


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩, ০৭:০৩ পিএম
ব্যস্ত সময় পার করছেন টাঙ্গাইলের কামাররা

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার উপকরণ দা, ছুরি, চাপাতি কিনতে কামারের দোকানে বাড়ছে ভিড়। আর এ সকল উপকরণ তৈরি করতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন কামার শিল্পীরা। তবে কয়লার দাম বেশি হওয়ায় অন্যবারের চেয়ে এবার দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতির দাম কিছুটা বেশি।

টাঙ্গাইলের বিভিন্ন কামারপল্লী ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির পশু কাঁটার জন্য পরিবারের ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত দা-বটি ও ছুরি সান দেওয়ার জন্য নিয়ে আসছেন কামারদের কাছে। এর ফলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কামারদের বিরামহীন ব্যস্ততা। অন্য সময়ের চেয়ে দোকানে কর্মচারীর সংখ্যাও বেড়েছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা গ্রামের শান্ত কর্মকার জানান, সাধারণত স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা ব্যবহার করে দা, বটিঁ ও ছুরি তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণগুলোর দাম তুলনামূলকভাবে কম। এ ছাড়া লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহা ৫০০ টাকা, নরমাল ৩০০ টাকা, ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, বটি ২০০ থেকে ৪০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০, চাপাতি ৫০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

বেতকা এলাকার মনু মিয়া নামের এক ক্রেতা বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর যন্ত্রপাতির দাম বেশি। তবুও কিছু করার নেই কোরবানির পশুর চামড়া ছাড়াতে হবে। তাই দাম বেশি দিয়েই নিতে হচ্ছে।”  

সুশান্ত কর্মকার বলেন, “বছরের ১১ মাসে ব্যবসা হয় এক রকম আর কোরবানির ঈদের আগের এক মাসে ব্যবসা হয় আরেক রকম। কোরবানিরর ঈদ এলে আমাদের বেচা-বিক্রি ও ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তবে দাম এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। অনেকেই স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছে দাম বাড়ার বিষয়টি।”

দা-বটির দোকানি সুশীল কর্মকার বলেন, “একসময় কামারের কাজ করেই পেট চালাতাম। আগের মতো বেচাকেনা নেই। এক সময় কামারদের কদর ছিল এখন তা আর নেই। এখন মেশিনের সাহয্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে, ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষের আকর্ষণ হারাচ্ছে। হয় তো বা এক সময় এই পেশা আর থাকবে না।”

কামার প্রবাস বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষরা এ কাজ করে আসছেন। সেই সুবাধে আমি এ কাজ করি। সারা বছর তেমন কাজ কাম না থাকলেও কোরবানির সময় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। এখনো খুচরা বিক্রি ভালোভাবে শুরু হয়নি। মানুষ কোরবানির পশু কেনার পরে দা, বটি কেনে। এখন আমরা বেপারির অর্ডারের যন্ত্রপাতি তৈরি করে সরবরাহ করছি।” 

Link copied!