• ঢাকা
  • শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২, ০২ মুহররম ১৪৪৬

ট্যাংকে শিং মাছ চাষ করে সফল আনোয়ার


জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
ট্যাংকে শিং মাছ চাষ করে সফল আনোয়ার

জয়পুরহাট সদর উপজেলার তেতুলতলী গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আনোয়ারুল ইসলাম। স্বল্প জায়গায় অল্প সময়ে ও কম খরচে অধিক লাভ—এই তিন সূত্রে বাড়ির আঙিনায় ইট-সিমেন্টের তৈরি একটি বিশেষায়িত ট্যাংকে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। একই সঙ্গে আশপাশের তরুণদেরও উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি।

স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা জেআরডিএম-এর সহায়তায় ১০ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার একটি ট্যাংকে আনোয়ারুল প্রথমে মাত্র ৫ হাজার টাকার পোনা ছাড়েন। দুই মাসের ব্যবধানে ২০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করে তিনি লাভ করেন ১৫ হাজার টাকা।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “পুকুরে জায়গার সংকট, পানির ঘাটতি ও রোগবালাইয়ের সমস্যা থাকে। সেদিক থেকে ট্যাংকে এসব ঝুঁকি কম। মাছ দ্রুত বাড়ে, রোগও হয় না।“

আনোয়ারুলের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে একই এলাকার মামুনুর রশিদ, গোলাপ হোসেন ও তারাজুল ইসলামও ট্যাংকে মাছ চাষ শুরু করেছেন। কলেজপড়ুয়া তরুণ সিয়াম ও গৌতম এবং নারী উদ্যোক্তা শিখা রানীও এই পদ্ধতিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

পাইকারি ও খুচরা বাজারে ট্যাংকে চাষ করা শিং মাছের চাহিদা বেশি। বর্তমানে প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। উৎপাদন ব্যয় কম ও লাভজনক হওয়ায় এই পদ্ধতি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

জেআরডিএম-এর মৎস্য কর্মকর্তা ইমুনা পারভীন টুম্পা বলেন, “ট্যাংকে মাছ চাষ পানির অপ্রতুলতা ও জমির সংকটে পড়া মানুষের জন্য দারুণ কার্যকর পদ্ধতি। আমরা আনোয়ারুল ইসলামের মতো উদ্যোমী ও আত্মবিশ্বাসী উদ্যোক্তাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।”

জয়পুরহাট সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “ট্যাংক পদ্ধতিতে বছরে দুই থেকে তিনবার মাছ চাষ সম্ভব এবং মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে কম। জলবায়ু ও খরাপ্রবণ এলাকার জন্য এই পদ্ধতি হতে পারে টেকসই বিকল্প।”

জেআরডিএম-এর শাখা ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তি ও সৃজনশীল উদ্যোগের সংমিশ্রণে বাড়ির এক কোনে ট্যাংক পদ্ধতিতেই গড়ে তোলা যায় একটি লাভজনক খামার। সময় এখন উদ্যোগ নেওয়ার।”

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, “শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাইলে কম পুঁজি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে সফল উদ্যোক্তা হতে পারে। এতে গ্রামীণ অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।”

Link copied!