সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে বরগুনায় নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তলিয়ে গেছে জেলার অনেক নিম্নাঞ্চল। এছাড়া বড়ইতলা ফেরিঘাটের সড়কটিও তলিয়ে গেছে পানিতে। বন্ধ রয়েছে যানবাহন পারাপার। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লঘুচাপের প্রভাবে বুধবার (২৮ মে) দুপুর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। রাত থেকে বৃষ্টি বাড়তে থাকে এবং ক্রমশই সেটি ভারি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে ভারি বৃষ্টি ও হালকা ধমকা বাতাস বইছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে বড়ইতলা ফেরিঘাটের সড়ক। এতে ফেরির মধ্যে আটকা পড়েছে যানবাহন।
এর আগে বিশেষ সতর্ক বার্তায় নদী বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জোয়ারের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় প্লাবিত হয়েছে বরগুনার নিম্নাঞ্চল।
এ বিষয়ে বড়ইতলা গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ হোসেন বলেন, “প্রতিবছর এমন দুর্যোগে আমরা ভোগান্তিতে পড়ি। নদীর পাশে থাকা একটি খাল দিয়ে পানি প্রবেশ করে পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়। আজকের জোয়ারে আমাদের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। কোনো রকমে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি, খাওয়ার কিছু নেই।”
ফেরি পার হতে এসে পাথরঘাটার সবুজ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, “সকালে আমি বরগুনায় আসছিলাম কাজে এখন এসে দেখি এখানে কোমর সমান পানি। ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে শুধু খেয়া চলছে। এ দুর্যোগে এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পার হতে হবে।”
স্থানীয় দোকানদার রিয়াজ জানান, অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে দোকান প্লাবিত হয়েছে। যদি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানে, তাহলে আর কিছুই থাকবে না। রাতের বেলা পানি আরও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম সরেজমিনে বড়ইতলা ফেরিঘাট পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু এলাকায় গাছের ডাল পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্র এবং স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত আছে। শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে এবং প্রয়োজনে দ্রুত বিতরণ করা হবে।”