• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

৫ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা


পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৪, ০৮:১৭ এএম
৫ ডিগ্রিতে নামল পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
তীব্র শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। ছবি : প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে রাতভর টিপ টিপ বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরে ভিজে গেছে পিচঢালা পথ। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারদিক। উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু জনজীবন। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা দেশের মধ্যে এবং চলতি শীত মৌসুমের মধ্যেও সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. রোকনুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মো. রোকনুজ্জামান জানান, আজ শুক্রবার ভোর ৬টায় সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা গতকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজকের তাপমাত্রা অনুযায়ী তেঁতুলিয়ায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বইছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের ভোগান্তিতে পড়েছেন পঞ্চগড়ের খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ। এর সঙ্গে বয়ে চলা উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন সড়কে ধীরগতিতে যান চলাচল করতে দেখা গেছে। কিছু কিছু যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। তবে ঘন কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢাকা পড়লেও জীবিকার তাগিদে সাত সকালেই বের হন শ্রমজীবী মানুষেরা। ঘন কুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে বিঘ্নিত হয়েছে যানবাহন চলাচল।

মিজানুর রহমান নামের এক পাথর শ্রমিক বলেন, প্রতিদিন সকালে বরফ গলা ঠান্ডা পানিতে নেমে পাথর উত্তোলন করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আজকে মনে হচ্ছে তীব্র শীতে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। যেন বরফ পড়ছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। পরিবারের কথা চিন্তা করেই বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়।

এদিকে উত্তর হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে দুদিন ধরে বয়ে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহে পরিণত হয়েছে।

শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। ঠিকভাবে কাজ করতে না পারায় তাদের আয় উপার্জনে ব্যাঘাত ঘটছে। আবার একটু কাজ করতেই নাজেহাল হয়ে পড়ছেন। শীত নিবারণের জন্য পুরাতন মোটা কাপড়ের (হকার্স মার্কেট) দোকানগুলোতে ভিড় করছে মানুষজন। এই শীত ও ঘন কুয়াশা কৃষকদেরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠে থাকা আলু ও টমেটো খেতে দেখা দিয়েছে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। আবার বোরো চারাও ঠিকভাবে অঙ্কুরোদগম হচ্ছে না।

তীব্র শীত আর কুয়াশার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধারা। প্রতিনিয়তই সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।

শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন পঞ্চগড়ের প্রায় ২০ হাজার পাথর শ্রমিক। নদীর বরফশীতল জলে নেমে পাথর তুলতে পারছেন না তাঁরা। বরফের মতো ঠাণ্ডা পানিতে নেমে পাথর তুলতে হয়, কিন্তু এখন তীব্র শীতের কারণে তা করতে পারছেন না তিনি। যেদিন সূর্যের তেজ একটু বেশি থাকে সেদিন নদীতে নামতে পারেন। তাও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পানি থেকে উঠে পড়তে হয়। আর অন্যদিনগুলো বসেই থাকতে হয়।

Link copied!