• ঢাকা
  • সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ৪ জ্বিলকদ ১৪৪৫
পাঠাগারের খোঁজে—৯

পাঠকে মুখরিত ময়েজউদ্দিন গণগ্রন্থাগার


হারুন-অর-রশিদ, ফরিদপুর
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২২, ০৯:০০ এএম
পাঠকে মুখরিত ময়েজউদ্দিন গণগ্রন্থাগার

একটি পাঠাগারবিহীন সমাজ, অন্ধকারের মতো। মানবিক বিকাশে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে গ্রন্থাগার হচ্ছে মননশীল মানুষ গড়ার এক সেতুবন্ধন। জ্ঞানার্জনের একটা বড় জায়গা গণগ্রন্থাগার।

সকল পাঠকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে অবাধে তথ্য ও জ্ঞান আহরণের সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমাজকে জ্ঞানের আলোয় বিকশিত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে ফরিদপুরের ময়েজউদ্দিন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার। এর অবস্থান জেলা শহরের কমলাপুরের ময়েজউদ্দিন স্কুল সংলগ্ন।  

যেখানে রয়েছে ৪৪ হাজার ২৫৫টি বই পাঠের সুবিধা, ন্যূনতম নিরাপত্তা জামানতের মাধ্যমে সদস্যপদ ও বই নেওয়ার সুবিধা, প্রতিদিন দশ থেকে বারোটি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকী পাঠের সুবিধা, পুরাতন বাঁধাই পত্রিকা পাঠের সুযোগ, শিশুদের জন্য শিশু কর্নার, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য পৃথক জব কর্নার। গ্রন্থাগারে বই সমূহ থেকে প্রয়োজনীয় অংশ ফটোকপির সুযোগ, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে রচনা, আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ফ্রি ইন্টারনেট ও ওয়াইফাই সুবিধা, রয়েছে পাঠকদের জন্য মনোরম পাঠকক্ষ।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করা এই গণগ্রন্থাগারটির নিয়মিত পাঠক নাইম হাসান বলেন, “আমরা যারা অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে চাকরিপ্রত্যাশী, তাদের জন্য চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটি ভালো জায়গা এ গণগ্রন্থাগারটি। লাইব্রেরির পরিবেশটাও অসাধারণ। এছাড়া লাইব্রেরির কর্তৃপক্ষও বেশ পাঠকবান্ধব। তাই নিয়মিত এখানে পড়তে আসি।”

এখানে পড়তে আসা মেহেরুন নেছা দিবা নামে ইডেন কলেজ থেকে গণিত বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করে চাকরিপ্রার্থী এক শিক্ষার্থী বলেন, “এখানের পরিবেশটা অনেক ভালো লাগে। পরিবেশটাও খুব পাঠ উপযোগী। পাঠ করার জন্য পর্যাপ্ত বই রয়েছে। সবাইকে দেখে পড়ার আগ্রহ জাগে। তাই নিয়মিত এ লাইব্রেরিতে ছুটে আসি।”

রাজেন্দ্র কলেজের ফিনান্স এন্ড মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রেয়া সরকার বলেন, “লাইব্রেরিতে এসে আমার পড়ালেখার আগ্রহটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। পরিবেশটা অনেক পাঠকবান্ধব।”

এখানে পড়তে আসা তিশা সাহা নামের আরেক পাঠক জানালেন, এখানে রয়েছে দেশ বিদেশের ৪৪ হাজারেরও বেশি বই। রয়েছে স্থানীয়সহ ১০-১২টি জাতীয় পত্রিকা পাঠের সুবিধা। তাই নিয়মিত ছুটে আসি এই প্রাঙ্গণে। একরকম প্রেমে পড়ে গিয়েছি এই গণগ্রন্থাগারটির।”

বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করা সুমন সরকার বলেন, “চাকরির রেফারেন্সের বই পড়তে আসি এখানে। এখানকার পরিবেশ ও স্টাফরা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। তবে এখানে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা রয়েছে। প্রতিদিনই পাঠক সংখ্যা বাড়ায় পাঠকদের তুলনায় বসার জায়গা কিছুটা কম।”

গণগ্রন্থাগারটির সহকারী লাইব্রেরিয়ান ও ইনচার্জ সাজু আহম্মেদ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “পাঠকদের কথা মাথায় রেখে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। আমরা শিশু পাঠকদের জন্য শিশু কর্নার, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার, পাঠকদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ওজন মাপার মেশিন কিনে দিয়েছি, পাঠকদের জন্য খাবার ও নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ রেখেছি। এছাড়া অতি সম্প্রতি বাচ্চাদের কোডিং শেখানোর জন্য KANO কম্পিউটার ও ট্রয় ব্রিকস সংযুক্ত করা হয়েছে।”

সাজু আহম্মেদ আরও বলেন, “এ লাইব্রেরিতে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০ জন পাঠক পড়তে আসেন। আসন সংখ্যার চেয়ে পাঠক সংখ্যা বেশি হওয়ায় লাইব্রেরির সম্প্রসারণ প্রয়োজন। এছাড়া পাঠকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে একটা গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য আমরা কাজ করছি।”

Link copied!