গাজীপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নতুন তথ্য উঠে এসেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, চাঁদাবাজির খবর প্রকাশের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে নারী-সংক্রান্ত একটি ঘটনা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) রবিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তায় এক নারীকে মারধরের ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীরা তাকে ভিডিও মুছে ফেলতে বলে। তুহিন ঘটনাস্থল থেকে সরে গেলেও হামলাকারীরা তাকে অনুসরণ করে। একপর্যায়ে কাছের একটি চায়ের দোকানে তুহিন বসে থাকাকালে সেখানেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, হামলাকারীদের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
নিহত তুহিনের মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার এ নির্মম হত্যাকাণ্ডে গাজীপুরসহ দেশের সাংবাদিক সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পাবনার চাটমোহন উপজেলার পাঁচবারিয়া এলাকার ফয়সাল হাসান (২৩), কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কাশিপুর এলাকার শাহ জামাল (৩২) ও সুমন (২৬)।
এর আগে এ ঘটনায় এক দম্পতিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন মিজানুর রহমান ওরফে কেটু মিজান, তাঁর স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন ও মো. স্বাধীন। পুলিশের ভাষ্য, তাঁদের মধ্যে তিনজনকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে শনাক্ত করা গেছে ও তাঁরা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য।
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুর স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে।