কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খানের একটি ফেসবুক পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ওই পোস্টে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণের ভেতর দিয়ে গুলতেকিন হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে অতীত দাম্পত্যজীবনের একটি দুঃখজনক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তার এই পোস্টকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে দ্বিমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একপক্ষ গুলতেকিনের পাশে দাঁড়িয়ে তার যন্ত্রণার প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে, অন্যপক্ষ প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি কলুষিত করার অভিযোগ তোলে।
এই বিতর্কে অবশেষে মুখ খুলেছেন হুমায়ূন আহমেদ ও গুলতেকিন খানের পুত্র, চলচ্চিত্র নির্মাতা নুহাশ হুমায়ুন। শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে তিনি জানান নিজের অবস্থান।
নুহাশ লিখেছেন, আপনি একজন শিল্পীর কাজ ভালোবাসতেই পারেন। কিন্তু একইসঙ্গে মানতে হবে, তার ব্যক্তিজীবন জটিল হতে পারে। মানুষ ভুল করে, যেমনি আপনার প্রিয় উপন্যাসের চরিত্রগুলো করে।
তিনি আরও লেখেন, কেউ হয়তো কোটি মানুষকে আনন্দ দেয়, কিন্তু একইসঙ্গে একজন কাছের মানুষকে কষ্ট দিতে পারে। তাই বলে সেই কষ্ট পাওয়ার কথা চেপে রাখা যায় না। আবার এটাও হতে পারে না যে, মৃত্যুর পর কাউকে অসম্মান করা হবে।
নুহাশের এই ভারসাম্যপূর্ণ মন্তব্যে স্পষ্ট যে, তিনি একদিকে পিতার সৃষ্টিশীলতা ও প্রভাবের মর্যাদা দিচ্ছেন, অন্যদিকে মায়ের কষ্ট ও আত্মপ্রকাশের অধিকারকেও অস্বীকার করছেন না।
নুহাশ হুমায়ুন ইতোমধ্যেই নিজের স্বতন্ত্র পরিচিতি গড়ে তুলেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে। অতিপ্রাকৃত, হরর ও ফ্যান্টাসি ঘরানায় কাজ করে তিনি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন।
নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পথে তিনি সবসময়ই পিতার শিল্প-ঐতিহ্য ও মায়ের সাহসিকতা—দুইয়েরই ছায়া বহন করছেন। এবং এবারও বিতর্কের মুখে সংযত ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, পরিণত দৃষ্টিভঙ্গিই একজন শিল্পীর বড় পরিচয়।