• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

কমছে পানি, দেখা দিয়েছে নানা রোগ


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম
কমছে পানি, দেখা দিয়েছে নানা রোগ

কুড়িগ্রামে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে চরাঞ্চলের নিচু এলাকার বানভাসিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ।

অনিরাপদ পানি পান করা, অস্বাস্থ্যকর বাথরুম ব্যবহার এবং বন্যার পানিতে চলাচলের কারণে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানান বানভাসিরা।

সরেজমিনে জেলার সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার পোড়ার চর, চর খেয়ার আলগা, চর ইয়ুথনেট, চিড়া খাওয়ার চর, পার্বতীপুর চরসহ আশপাশের গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘর-বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। কাদা-পানির মধ্যে চলাচল করায় বানভাসী মানুষদের হাত-পায়ে চুলকানি ও সাদা ঘা দেখা দিয়েছে। অনেকে পেটের পীড়া, চর্মরোগ, জ্বর ও ডায়েরিয়ায় ভুগছেন। অনেক বাড়ির বাথরুম ও টিউবওয়েল এখনো পানির নিচে। চলাচলের রাস্তায় পানি থাকায় নৌকা নিয়ে যাতায়াত করছেন অনেকেই।

বন্যার কারণে অধিকাংশ ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রান্নার চুলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে খাবার সংকট।

পোড়ার চরের বাসিন্দা হাসিনা বেগম বলেন, “হামার বাড়িত ঘরত এল্যাও পানি আছে। দেখেন হাত-পাও চুলকানি শুরু হইছে। কোনো সরকারি লোক আসে নাই বড়ি (ঔষধ) দিতে।”

চর খেয়ার আলগার বাসিন্দা সুলতান আলী বলেন, “বাবা আজ দুইদিন থাকি বাড়িয়ালীর জ্বর। ঘরের পানি নামলেও আঙনেত (উঠোন) এল্যাও পানি আছে। নোংরা পানিত চলাফেরা করবের নাগছি।”

চর ইয়ুথনেটের বাসিন্দা মো. মাসুদ বলেন, “আমাদের চরে ঘর-বাড়ির পানি নামি গেইছে। বাড়ির সামনত পানি নামে নাই। মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে হচ্ছে নৌকা করে। কোনো স্বাস্থ্যকর্মী এখন পর্যন্ত এই চরে আসে নাই।”

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার, চিলমারী বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার, তিস্তা কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার, ধরলা সদর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, বন্যার শুরু থেকে ৮৩টি মেডিকেল টিম বানভাসীদের চিকিৎসা সেবা দিতে কাজ করছে। প্রতিটি টিমে ৩ জন করে স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। চলতি বন্যায় ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ১০ হাজার খাবার স্যালাইন বিতরণের জন্য ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর এ মোর্শেদ বলেন, “বন্যার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের মেডিকেল টিমের স্বাস্থ্যকর্মীরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বানভাসীরা সেবা পাচ্ছেন না কথাটি সঠিক নয়। আমরা প্রতিদিন ডায়েরিয়া আক্রান্তদের তথ্য সংগ্রহ করছি। সেইভাবে এখনো প্রার্দুভাব দেখা দেয়নি। চর্মরোগ বা জ্বরের জন্য আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা ও ঔষধ নিতে পারবে।”

Link copied!