টাঙ্গাইলের যমুনার বিস্তীর্ণ চরগুলোতে কলার চাষ করছেন চাষিরা। যেসব জমিতে ফসল আবাদের কল্পনাও করেনি কেউ, সেখানে নানা জাতের কলার চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, যমুনার চর অঞ্চলে অন্য ফসলের সঙ্গে কৃষকরা কলার চাষ করছেন। সারি সারি কলা গাছে ধরে আছে কাঁদি কাঁদি কলা। অন্য ফসলের চেয়ে কলা আবাদ লাভজনক হওয়ায় কলা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলে প্রায় চার হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। উৎপাদন হবে এক লাখ ৩০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কলা। সাধারণত টাঙ্গাইলের পাহাড়িয়া এলাকায় কলার চাষ হয়। সম্প্রতি জেলার যমুনার চরগুলোতে প্রচুর কলার চাষ হচ্ছে। এক সময় এসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকত। এখানকার কলা চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।লাভজনক হওয়ায় চাষিরা খুশি কলার চাষ করে।
কলাচাষি রহিজ উদ্দিন বলেন, “যমুনার চরে কলা চাষ খুবই লাভজনক। আমি দুই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। আমার কলা বাগানে ৮০০ কলা গাছ আছে। ৮০০ কলা গাছে ৮০০ কলার কাদি আসবে। বছরে দুই লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারব। খরচ বাদে আমার দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে।”
জামাল মিয়া নামের আরেকজন কলাচাষি বলেন, “অন্য ফসল আবাদ করলেও সেই ফসল ঘরে তুলতে পারি না। এই জন্য যমুনার চরে কলা চাষ করেছি। আমার বাগানে চারশ কলা গাছ রয়েছে। প্রায় ১৫০টি গাছে কলা এসেছে। এক মাসের মধ্যে কলার কাঁদি কাটা যাবে। আমার খরচ ৫০ হাজার টাকা হলেও দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে।“
কলাচাষি নজরুল বলেন, “চর এলাকায় অনন্য ফসল আবাদ করে শান্তি পাই না। কলা আবাদ করলে লাভবান বেশি হয়। আমি দুই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। প্রায় সাড়ে চারশ কলা গাছ আছে। ভালোই কলা এসেছে। কলা চাষ করে আমি ভালো লাভবান হওয়া যায়। খরচ বাদে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মতো কলা বিক্রি করতে পারব।”
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশেক পারভেজ বলেন, “জেগে ওঠা চরগুলোতে কৃষকরা মিশ্র জাতের ও উন্নত জাতের কলা চাষ করছেন। আমরা মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের দিয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছি।”