• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সারা দেশে বই উৎসব


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৩, ০৯:০৪ পিএম
সারা দেশে বই উৎসব

মহামারি করোনার কারণে গত দুই বছর বই উৎসব হয়নি। ‘পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই’ স্লোগানে সারা দেশে রোববার (১ জানুয়ারি) বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন বই পেয়ে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। তবে উৎসব থেকে বই না পেয়ে মলিন মুখে ফিরেছে অনেক ছাত্র-ছাত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিনামূল্যে বিতরণ কার্যক্রমকে মহৎ কাজ বলে উল্লেখ করেছেন অনেকেই। বই ছাপিয়ে বিনামূল্যে বিতরণ করা খুব দুঃসাহসিক কাজ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। রাজশাহীতে বই উৎসবে তিনি এ কথা বলেন। নওগাঁয় খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, “বছরের প্রথম দিনে বই বিতরণের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় শিক্ষার মান আরও উন্নত হয়েছে।” সুশিক্ষিত হয়ে দেশ গড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

নোয়াখালী

নোয়াখালীতে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ২০০৩টি প্রাথমিক ও ৩১৩টি মাধ্যমিক এবং ২৭৫টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। চাহিদা পরিমাণ বই এখনই না পাওয়া যায়নি বলে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।  তবে কয়েক দিনের মধ্যে সব বিষয়ের বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে পারবেন বলে আশা করছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা। তবে মোট ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ নতুন বইয়ের।

চাটখিলের কড়িহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম বলেন, “জেলার ২০০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বইয়ের চাহিদা ছিল ১৭ লাখ ১২ হাজার ৫৫৭ পিস, যার বিপরীতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা তিন লাখ নতুন বই হাতে পেয়েছি। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই রয়েছে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সব বই এখনো হাতে এসে পৌঁছায়নি। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত বইগুলো ‘বই উৎসব’ এর মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের চাহিদা মোতাবেক সব বই হাতে আসবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।”

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর বলেন, “২০২৩ শিক্ষাবর্ষে জেলার ৩১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৭৫টি মাদ্রাসায় আমাদের নতুন বইয়ের চাহিদা ছিল ৫৪ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৭ পিস। যার বিপরীতে আমরা নতুন বই সরবরাহ পেয়েছি ৩২ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৫ পিস। বই উৎসবের মাধ্যমে প্রাপ্ত বইগুলো উপজেলা থেকে বিদ্যালয় ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বাকী বইগুলো এলে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”

সাতক্ষীরা

ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শীতের কুয়াশা মাখা সকালে সাতক্ষীরায় প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে সিলভার জুবিলী মডেল বিদ্যালয় চত্বরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে কোমলমতি শিক্ষাথীদের হাতে ফুলসহ বিনামূল্যের নতুন বই তুলে দেন সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমীন করিমী, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু হেনা মোস্তফা, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল গনি প্রমুখ। পরে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়।

এবছর সাতক্ষীরায় এবার ৩০৮টি মাধ্যমিক ও কলেজিয়েট স্কুল, ২১৫টি দাখিল মাদ্রাসায় দুই লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে ৩০ লাখ ৮০ হাজার নতুন বই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬৫ জন প্রাথমিক, প্রাক প্রাথমিক ও এবতেদায়ি শিক্ষার্থীকে ৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৫টি নতুন বই দেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, এবতেদায়ি, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, এসএসসি ভোকেশনাল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশু কিশোরদের মধ্যে এসব বই বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অজিত কুমার সরকার।

অজিত কুমার সরকার আরও জানান, প্রাক প্রাথমিকের ৩৮ হাজার ১৪১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১টি করে বই বরাদ্দ থাকলেও তা হাতে না পাওয়ায় আজ সবাইকে ১টি করে খাতা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৬টি করে বই দেওয়ার কথা থাকলেও তা প্রাপ্তি না থাকায় আজ ৩টি করে বই দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ক্লাসে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে এসব বই তুলে দেওয়া হবে।

রাজশাহী

রাজশাহীতে উৎসবমুখর পরিবেশে পাঠ্যপুস্তবক উৎসব দিবসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে পাঠ্যপুস্তবক উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক এই পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১২ সালে দেশ বর্তমানের মতো এতো উন্নত ছিল না। তবে সেই সময়েই সারা দেশে বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়ার দুঃসাহসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বই ছাপিয়ে বিনামূল্যে বিতরণ করে দেওয়াটা খুব দুঃসাহসিক কাজ। প্রতিবছর এভাবে বই তৈরি করে বাঁধাই করে ট্রাকে করে স্কুলে স্কুলে গ্রামেগঞ্জে পাহাড়ে পৌঁছে দেওয়া এটি সহজ কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী সেই কাজটি করে যাচ্ছেন সুনিপুণভাবে। এ বছর সরকার সারা দেশের ৪ কোটি ৯ লাখ শিক্ষার্থীদের হাতে প্রায় ৩৫ কোটি বই বিনামূল্যে তুলে দিচ্ছে। আমি মনে করি এটি নাগরিকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারলে তারা দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হবে। এতে আমাদের সবদিক দিয়েই লাভ। কাজেই সরকার এটা বিনিয়োগ করছেন নাগরিকদের কল্যাণে, দেশবাসীর কল্যাণে। এটা অব্যাহত থাকবে। এটা আরও বেশি সম্প্রসারিত হচ্ছে।”

নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লিটন বলেন, “যারা দেশ ও জাতি গড়বে আগামী দিনে তাদেরকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে না পারলে দেশের কাছে বোঝা হয়ে যাবে তারা। তারা যাতে সম্পদ হয়, দেশের জন্য আশির্বাদ হয়, সেকারণে তাদের হাতে সময় মতো বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। দেশে প্রায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষিতের হার। আমরা অপেক্ষায় তাকিয়ে আছি সেই দিকে যেদিন শতভাগ শিক্ষিত জাতিতে পরিণত হব আমরা।”

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার এএনএম মইনুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান শাহ, রাজশাহী জেলা শিক্ষা অফিসার মো. নাসির উদ্দিন, অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে সভাপতি মোশাররফ হোসেন বাচ্চু, অধ্যক্ষ মো. সাইফুল হক প্রমুখ।

নওগাঁ

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, “বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পাওয়ায় তারা পড়াশোনায় উৎসাহিত হচ্ছে। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি ‘মাইলফলক’।” সকাল থেকে নওগাঁর পোরশার নিতপুর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ চত্বরে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।

বই উৎসবে পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াজেদ আলী মৃধা প্রমুখ।

এবার নওগাঁ জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে মোট লাখ ৩৬ লাখের বেশি বই দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৯ লাখ ২৬ হাজার ৩৬৫ নতুন বই।

টাঙ্গাইল

বছরের প্রথম দিনে টাঙ্গাইলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪২৭টি নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে। দুপুরে সদর উপজেলার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দীন হায়দার।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওলিউজ্জামানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আব্দুর রহিম সুজন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মুহাম্মদ সরোয়ার আলম, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। পরে অতিথিরা টাঙ্গাইল কালেক্টেরট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণে অংশ নেন। জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১২টি উপজেলায় ৫ লাখ ৫০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৯ লাখ ৭ হাজার ১১৮টি বই ও ৪ লাখ ৪০ হাজার মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৭ লাখ ২৯ হাজার ৩০৯ টি বই বিতরণ করা হবে।

খাগড়াছড়ি

জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৭০৬টি সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১২৩টি মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক যোগে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯২টি বই বিতরণ করা হয়। নতুন বই পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা। সকালে খাগড়াছড়ি সদরের ঠাকুরছড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তোলা দেওয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু। এ সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সাহাব উদ্দিন জানান, খাগড়াছড়িতে প্রাথমিক পর্যায়ের ১ লাখ ১৩ হাজার ২৩২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯২টি পাঠ্যপুস্তকের চাহিদার বিপরীতে মিলেছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৫৯টি। যা মোট চাহিদার ৩৮ শতাংশ। তবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য শতভাগ পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ পাওয়া গেছে। মাধ্যমিকে পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা সাড়ে ৯ লাখ হলেও দাখিল ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ছাড়া অন্য মাধ্যমের পুরোপুরি পুস্তক পাওয়া যায়নি।

ফেনী

সারা দেশের মতো ফেনীতেও পালিত হয়েছে বই উৎসব। বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা হাতে নতুন বই পেয়ে আনন্দিত। তবে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ বই এসেছে। ছাপাই জটিলতা ও নতুন কারিকুলামের কারণে প্রথমদিনে চাহিদার ৬০ শতাংশ বই বিতরণ করা হয়েছে। বাকি বই দু-এক দিনের মধ্যেই আসবে। উৎসব থেকে বই না পাওয়ায় মলিন মুখে ফিরলো ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী।

সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান পাঠ্যপুস্তক দিবসের উদ্বোধন করেন। ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুল, ফেনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় এবং সরকারি পাইলট স্কুলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে ফেনীর পাঠ্যপুস্তক দিবস পালিত হয়।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফি উল্ল্যাহ জানান, চলতি বছর জেলায় ২৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫২৭ বইয়ের চাহিদা রয়েছে। বিপরীতে ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ২১০ কপি বই এসেছে। যা শতকরা হিসেবে ৬০ শতাংশ। এছাড়া সদর উপজেলা ছাড়া ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই এখনও অন্য উপজেলায় পৌঁছেনি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলার ১ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে এবার নতুন বই ওঠবে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে সব বই এসেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই কম পেয়েছি। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ বই পেয়েছি। বাকী বই দুয়েকদিনের মধ্যেই চলে আসবে।

মাগুরা

মাগুরায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ উৎসব উদ্বোধন করা হয়েছে। সকাল ১০টায় মাগুরা পারনান্দুয়ালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ বই বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহ, জেলা শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ এস এম সিরাজউদ্দোহা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা মুন্সী রেজাউল হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নতুন বছরে জেলার মোট ৫০৩টি প্রাাথমিক বিদ্যালয়ের ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭২২টি বই এবং ১৭৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮৮ হাজার ৭০৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৩০টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া জেলার ৭৪টি মাদ্রাসা ও ১০টি  কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বিনামূল্যে এ বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এ বই বিতরণ উৎসবের আয়োজন করে।

কুমিল্লা

কুমিল্লা নগরের আদর্শ বিদ্যাপীঠ গুলবাগিচা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই ও ফুল তুলে দিয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম। এসময় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শিউলি রহমান তিন্নি, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মান্নান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহার সহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। 
 

Link copied!