• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সিজারের পর নবজাতক উধাও, যা বললেন চিকিৎসক


পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩, ০৩:৪১ পিএম
সিজারের পর নবজাতক উধাও, যা বললেন চিকিৎসক

পাবনা মডেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গৃহবধূর সিজারের পর বাচ্চা উধাও হওয়া নিয়ে যে ধোয়াশা তৈরি হয়েছে সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিজারের দায়িত্ব পালন করা ডা. শাহিন ফেরদৌস শানু।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি অডিটোরিয়ামে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এ সময় এনেস্থিসিয়া চিকিৎসক আরিফুর ইসলাম, হাসপাতাল পরিচালক সেলিম উদ্দিন ও রোগীর স্বামী নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে  ডা. শাহিন ফেরদৌস শানু বলেন, “ক্লিনিক থেকে আমাকে আমার রোগী বলে জরুরিভাবে সিজারের জন্য কল করা হয়। আমি এসে দেখি রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। আমার কোন প্রেসক্রিপশন বা কোন কাগজপত্র নেই। তথাপি ডাক্তার হিসেবে রোগীর অবস্থা দেখে তাকে সিজার করার উদ্যোগ নেই। চামড়া কাটার পর বুঝতে পারি এই রোগীর পেটে কোন বাচ্চা নেই। তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর স্বামী নজরুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে তাকে সরাসরি দেখানো হয়।”

ডা. শাহিন ফেরদৌস শানু বলেন, “মেডিকেলের ভাষায় এটাকে ফ্যানটম প্রেগনেন্সি বা ভৌতিক গর্ভধারণ বলা হয়। এমন রোগী খুব কম পাওয়া যায়। তাছাড়া রোগীর সাথে যে ফাইল ছিল সেগুলো ২০১৭ সালের রোগীর প্রথম বাচ্চার কাগজপত্র। জরুরি সময়ে তারিখ দেখা হয়নি। দেখা হয়েছিল রিপোর্টের রেজাল্ট। এই বিষয়টি রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়সারা দায়িত্ব ও কর্তব্যের কারণে হয়েছে।” 

বিষয়টি ভালোভাবে না দেখার কারণে তিনিও অভিযোগ থেকে মুক্ত নন বলে দাবী করেন। এটা নিতান্তই জরুরীর কারনে এমনটি হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ভুল স্বীকার করেন তিনি।

ক্লিনিক মালিক সেলিম উদ্দিন বলেন, “ডা. শাহিন ফেরদৌস শানুর নাম বলায় রোগীকে আমরা নিজেরা হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করে প্রেগনেন্ট সিনটম দেখে ডাক্তার কল করে সিজার করানো হয়।”

তবে পুরোপুরি পরীক্ষা নীরিক্ষা না করে রোগী ভর্তি করা হয়েছে বলে এ দায় স্বীকার করেন ক্লিনিক মালিক। তবে বাচ্চা উধাও বা চুরি হয়েছে এমন খবর নানা গণমাধ্যমে আসলেও এ তথ্য সঠিক নয় বলেও দাবি তার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিজারিয়ান রোগী আকলিমা খাতুন আঁখির স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন আমাকে বলেছেন, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। তিন ধরণের পরীক্ষা নীরিক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে আদৌ আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন কি না। তবে ইতোমধ্যে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করে জানানো হয়েছে, আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন না। মেডিকেলের পরিভাষা এটি ফ্যানটম প্রেগনেন্সি বা ভৌতিক গর্ভধারণের কথা বলা হচ্ছে।”

এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় ও সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, “সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক সাইফুর রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, “বাচ্চা উধাওয়ের বিষয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা মেডিকেল কলেজের গাইনীও অবস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নার্গিস সুলাতানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।”

Link copied!