রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালুর বাড়িতে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তিনি বারান্দায় আসতেই তাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়।
শনিবার (৬ আগস্ট) রাত সোয়া ১টার দিকে তার মুন্সিডাঙ্গার বাসার এ গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, একটি প্রাইভেটকারে করে দুর্বৃত্তরা আতিকুর রহমানের বাড়ির প্রধান ফটকে যায়। অস্ত্রধারীরা গেটম্যানের কাছে কালুর খোঁজ করেন। আওয়ামী লীগ নেতা কালু ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় দাঁড়ালে অস্ত্রধারীরা তাকে লক্ষ্য করে পর পর তিন রাউন্ড গুলি চালায়। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে গাড়ির পথ অনুসরণ করে উপশহরের একটি বাসা থেকে তিনজনকে আটকসহ দুটি শটগান, একটি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন ও শতাধিক রাউন্ড গুলি জব্দ করে। পুলিশ অস্ত্রধারীদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করেছে।
পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অস্ত্রধারীরা কী উদ্দেশ্য আতিকুর রহমান কালুকে হত্যা করতে এসেছিলেন তার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ।
আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান কালু অভিযোগে জানান, প্রতিদিনের মতো তিনি রাত সাড়ে ১১টায় ঘুমিয়ে পড়েন। বোয়ালিয়া থানাধীন মুন্সিডাঙ্গা রানীবাজার এলাকার ছয়তলা ভবনটির তিনতলায় থাকেন তিনি। রাত সোয়া একটার দিকে বাসার প্রধান ফটকে চিৎকার চেঁচামেচি গালাগালি শুনে তার ঘুম ভাঙে। তিনি ভবনের তিনতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে গেটম্যান আমজাদের কাছে ঘটনা জানতে চান। এ সময় একদল অস্ত্রধারী তাকেই খুঁজছেন বলে জানিয়ে শটগান থেকে পর পর তিনটি গুলি ছুড়েন। তবে দ্রুত মাথা নিচু করায় গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বারান্দার গ্রিলে লাগে।
এদিকে গুলির শব্দে মহল্লার লোকজন বাসা থেকে বেরিয়ে এলে অস্ত্রধারীরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গাড়িটিকে শনাক্ত করে। পুলিশ গাড়ির পথ অনুসরণ করে রাত ২টার দিকে উপশহরের একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে ওয়াহিদ জামিল মুরাদ লিঙ্কন (৪৬), তার গাড়িচালক সজল আলি (৩৮) এবং অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে আটক করে।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, আটক মুরাদ লিঙ্কন নিজেকে একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালক পরিচয় দিয়েছেন। কেন তারা গভীর রাতে আওয়ামী লীগ নেতা কালুর বাড়িতে তাকে হত্যা করতে গিয়েছিলেন সেই তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
ওসি আরও জানান, ওয়াহিদ জামিল মুরাদ লিঙ্কনের বাড়ি নগরীর উপকণ্ঠ নওহাটায়। তবে উপশহরের একটি ভবনে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। লিঙ্কন তার সহযোগীদের নিয়ে নগরীর বাটার মোড়ে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। তিনি মূলত ডেভেলপার।
গুলিবর্ষণের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান কালু রোববার দুপুরে থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন।





































