মৌলভীবাজারে একটি পণ্যবাহী মিনি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে থাকা একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন বিএনপি নেতাসহ দুইজন।
গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেটে নিয়ে যাওয়ার সময় আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মৌলভীবাজার-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের কদুপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে মৌলভীবাজার ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন, কুলাউড়া উপজেলার ফকিরপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে আব্দুল মুহিত সবুজ (৪৫) ও জুড়ি উপজেলার কোনাগাঁও গ্রামের মস্কন আলীর ছেলে রফিক উদ্দিন (২৬)। নিহত আরেকজনের নাম জানা যায়নি। তবে তিনি জুড়ির আছুরিঘাট এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। আহত কারও পরিচয় জানা যায়নি।
আব্দুল মুহিত কুলাউড়ার গিয়াসনগর মাদ্রাসায় কেরানি পদে চাকরি করতেন। উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ছিলেন তিনি।
জানা যায়, লকডাউনের কারণে কোনো গণপরিবহণ চলাচল না থাকায় ঢাকা থেকে আসা পণ্যবাহী একটি মিনি ট্রাকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। মৌলভীবাজারের কদুপুর এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি গাছকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে গাছটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ট্রাকে চালকের পাশের আসনে বসা আব্দুল মুহিত সবুজ ও রফিক উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। কয়েকজন সেই গাড়ির উপরে অবস্থান করছিলেন। তারা গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে আহত হন।
লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সকালে মৌলভীবাজার সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেল সোয়া ৩টায় লাশগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল থেকে ফল, সবজি, মাছসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে ট্রাকটি সিলেটের বিয়ানীবাজারে যাচ্ছিল। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ট্রাকটি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কদুপুরে আসার পর চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে ট্রাকটি সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ট্রাকটি উল্টে খাদে পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে সকাল পৌনে ৭টার দিকে মৌলভীবাজার ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তারা হতাহতদের উদ্ধার করেন। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান। আহতদের উদ্ধার করে ফায়ার স্টেশনের অ্যাম্বুলেন্সে করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পথিমধ্যে তিনিও মারা যান।
হাসপাতালে উপস্থিত নিহত আবদুল মুহিতের বন্ধু সারোয়ার আলম বেলাল বলেন, মুহিত গত রোববার ঢাকায় গিয়েছিলেন। যাত্রীবাহী গাড়ি না পেয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে উঠেছিলেন তিনি। ট্রাকটি বিয়ানীবাজারে যাচ্ছিল। আমরা সকাল ৮টার দিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি।
মৌলভীবাজার ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা জালাল আহমদ বলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আমরা দুর্ঘটনার খবর পাই। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি কেটে সবাইকে উদ্ধার করি। আহতদের আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান এবং আহত হন তিনজন। পরে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।