চাঁদপুরে চলছে অক্সিজেনের তীব্র সংকট। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) হাসপাতাল চত্বরেই অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন এক রোগী।
প্রতিদিন গড়ে ৬০০ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হলেও তার বিপরীতে পুরো জেলার জন্য মজুত রয়েছে মাত্র ২৪০ লিটার। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার করেও সংগ্রহ করতে পারেননি স্বজনরা।
বুধবার (২৮ জুলাই) রাত ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতাল আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১১ জন রোগীর মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে মারা গেছেন আরও আটজন।
বর্তমানে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে বেড কিংবা ফ্লোরে জায়গা পেলেও অক্সিজেন পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার। ভর্তি হওয়ার চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পরও অক্সিজেন পাচ্ছেন না রোগীরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে দেখা মিলছে না অক্সিজেন সিলিন্ডারের। হাসপাতালের স্টাফরা এক বা একাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে প্রবেশ করলে রোগীর স্বজনরা সিলিন্ডার নিয়ে কাড়াকাড়ি ও টানাহেঁচড়া শুরু করেন। এ নিয়ে স্বজনদের মধ্যে একধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখা দিচ্ছে। অক্সিজেন সাপোর্ট না পেয়ে গত কয়েক দিনে এ হাসপাতালে কয়েকজন রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউনিসেফের উদ্যোগে সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বসানো লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বিষয়টি সংবাদ প্রকাশকে নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. সাখাওয়াত উল্লাহ।
সিভিল সার্জন বলেন, “করোনার এই দুর্যোগের মধ্যে আমাদের জন্য আপাতত স্বস্তির খবর হলো চার দিনের মধ্যে চাঁদপুর অক্সিজেন প্লান্ট চালু হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী (বৃহস্পতিবার রাত) বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য ডিজি সঙ্গে কথা বলেছেন। শিগগিরই অক্সিজেনের গাড়ি আসবে ঢাকা থেকে।”
লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট চালু হলে তার সুফল উপজেলার হাসপাতালগুলো পাবে কি না, তা জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, “অবশ্যই পাবে। আমরা আশা করি লিকুইড অক্সিজেন প্লান্টের অক্সিজেন দিয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভালোভাবেই কাভার দেওয়া যাবে। বর্তমানে আবুল খায়ের গ্রুপ আমাদের বিনা মূল্যে যে ১১০ লিটার অক্সিজেন বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডার করে দিচ্ছে সেগুলো আমরা উপজেলা পর্যায়ে পাঠাতে পারব। আশা করি এতে সব উপজেলার সমস্যা সমাধান হবে।”