• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫

খাল দখল করে হচ্ছে ভবন, নীরব প্রশাসন


সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২১, ০৮:৪৮ পিএম
খাল দখল করে হচ্ছে ভবন, নীরব প্রশাসন

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের নয়াবাড়ী গ্রামে খাল দখল করে চলছে ভবন নির্মাণ। আর এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন পালন করছে নীরব ভূমিকা।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ইমরান আহমদ মহিলা কলেজ থেকে খাসিয়াহাটি রাস্তার মাধবশাহ ফিশারিসংলগ্ন কালভার্টের পশ্চিম পাশ দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন নয়াবাড়ী গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৫)। পাকা পিলার স্থাপন করে পিচ ঢালাই দিয়ে ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। ভবনটি আরও বড় করার জন্য কয়েকটি পিলার স্থাপন করা হচ্ছে। কেউ কোনো কিছু না বোঝার জন্য ইতোমধ্যে ঢালাইয়ের ওপরে টিনশেড একচালা ঘর দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ করে রাখা হয়েছে। বর্তমানে টিনশেড ঘরের ভেতরে দেয়াল পাকাকরণের কাজ চলছে। ছোট গাড়ি দিয়ে ইট, পাথর ও বালু আনা হচ্ছে। রাস্তা থেকে কেউ দেখলে বোঝার উপায় নেই ভেতরে চলছে পাকাকরণের কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ও করিমসহ ১০-১২ জন জানান, এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে ব্যাপারটি জানানোর পরেও রহস্যজনক কারণে বন্ধ হয়নি ভবন তৈরির কাজ। খাল দখল করে ভবন নির্মাণের ফলে নিজপাট, চৌরীহাটি, তোয়াসীহাটি, জাঙ্গালহাটি ও নয়াবাড়ী এলাকার পানি খাল দিয়ে বের হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

স্থানীয়রা জানান, পরিকল্পিতভাবে সরকারি জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের কারণে অত্র অঞ্চল জলমগ্ন হবে। ফলে পানি আটকে এলাকায় ময়লা ও জীবাণু ছড়াবে। পার্শ্ববর্তী জেডিএফ আইডিয়াল স্কুল, জৈন্তিয়াপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও ইমরান আহমদ মহিলা কলেজ এলাকার বাসিন্দারা অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হবে। এলাকায় দূষিত পানি জমা হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াবে। তাদের অভিযোগের পরেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারুক হোসাইন তদন্ত করলেও রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নেননি খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী আরও জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি দখলমুক্ত করা না হলে উপজেলার অন্যান্য খালের ওপরে গড়ে উঠবে একের পর এক স্থাপনা। খাল দখলমুক্ত করতে বিভাগীয় কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করবেন তারা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফরিদ মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার নিকটাত্মীয় পরিচয় দিয়ে নাজমুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, জায়গা-জমি না থাকায় তার বোন সরকারি খালের ওপরে বাড়ি নির্মাণ করছেন। পানি চলাচলের জন্য ভবনের নিচের দিক খালি রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ না করতে অনুরোধ জানান তিনি।

জৈন্তাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত আজমেরী হক বলেন, বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। যদি সরকারি জায়গা দখল হয়, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারুক হোসাইল বলেন, আমি সরেজমিন তাদের সেখানে ভবন না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে তারা এ রকম কাজ করছে এ বিষয়টি জানা নেই। সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, কোনো জায়গায় খালের উপরে কিংবা খালের জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমি এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আর্কষণ করব।

Link copied!