আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে দিবসটি।
জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) উদ্যোগে ১৯৮০ সাল থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্ব পর্যটন দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটন’।
দিবসটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও পর্যটনকেন্দ্রের সঙ্গে সেতুবন্ধ গড়ে তোলা। এছাড়া পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া এ দিবসের অন্যতম লক্ষ্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সম্প্রসারণের ক্রমধারায় বিশ্বব্যাপী পর্যটন ব্যবসার প্রসার ঘটে। এ অবস্থায় পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও ভোক্তা শ্রেণির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে আন্তর্জাতিক ভ্রমণবিষয়ক সংস্থা বা আইইউওটিও। ১৯৭০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে সংস্থাটির বার্ষিক সম্মেলনে এর নাম রাখা হয় ‘বিশ্ব পর্যটন সংস্থা’। পরে ১৯৮০ সালে সংস্থাটির গঠনের দিবসে অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর তারিখে বিশ্বব্যাপী পর্যটন দিবস পালনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ক্রমধারায় প্রতিবছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
পর্যটন দিবস উপলক্ষে সোমবার দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য দেশের পর্যটন হোটেল-মোটেলগুলোতে এক দিনের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেছে পর্যটন করপোরেশন।
এ বছর বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথকভাবে বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক বাণীতে স্থানীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে পর্যটনের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় পর্যটন আকর্ষণসমূহকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্বদরবারে দেশের পর্যটনশিল্পকে কার্যকরভাবে তুলে ধরতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, “পর্যটনশিল্প বর্তমান বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নসহ দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অবশ্যম্ভাবী।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এই শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবহমান গ্রামবাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে। আর এর সুফল যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে, সে লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।”