নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লাথাম এখন হয়তো মনে মনে ভাবছেন ভুলটা করা উচিত হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস জিতে তাদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠানো যে বড় একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তার তা ভালোই টের পেয়েছে কিউই অধিনায়ক। কারণ ম্যাচটা তারা হেরে গেছে ১৯০ রানের বড় ব্যবধানে। প্রোটিয়াদের দেওয়া ৩৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কিউইরা গুটিয়ে যায় ১৬৭ রানে। ম্যাচের বাকি ছিল তখন ৮৭ বল। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ফন ডার ডুসেন।
পুনেতে টস ভাগ্যটা ছিল নিউজিল্যান্ডের। তবে ব্যাটিংয়ে নামা প্রোটিয়ারা অবশ্য শুরু থেকে খুব একটা বিধ্বংসী ছিল না। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে হারিয়ে তোলে ৪৩ রান। বাভুমা আউট হন ২৪ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে।
এরপর ডুসেনকে নিয়ে জুটি গড়েন ডি কক। খোলস ছেড়ে বের হয়ে এসে অ্যাটাকিং ব্যাটিং করে এই দুই ব্যাটার। দুজন মিলে ১৮৯ বলে গড়েন ২০০ রানের জুটি। যেখানে ডি ককের ১০২ রান ডুসেনের ৯১ রান। ডি কক তুলে নেন এবারের বিশ্বকাপে চতুর্থ সেঞ্চুরি। কুমার সাঙ্কাকারার সঙ্গে এক আসরে চতুর্থ সেঞ্চুরি গড়ার রেকর্ড করলেন তিনি। তার ওপরে আছে শুধু রোহিত শর্মা। রোহিত ২০১৯ সালে করেছিলেন এক আসরে ৫টি সেঞ্চুরি। তাদের এই ২০০ রানের জুটি ভাঙে টিম সাউদি। ১১৪ রানে বিদায় নেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তার ইনিংসে ছিল ১০ চার ও ৩ ছয়ের মার।
এরপর ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে ৪৩ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়েন ডুসেন। এর মাঝে ডুসেন তুলে নেন সেঞ্চুরি। এটি এই বিশ্বকাপে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১৩৩ রান করে ডুসেনকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙে সাউদি। দলীয় ৩১৬ রানের সময় ডুসেন যখন বিদায় নেন তখনও ম্যাচের বাকি ছিল ১৭ বল।
শেষ ১৭ বলে প্রোটিয়ারা সেভাবে রান তুলতে না পারলে স্কোরটা নিয়ে যায় সাড়ে তিনশর ওপরে। মিলার খেলেন ৩০ বলে ৫৩ রানের ইনিংস। ৪৯.৪ বলের সময় মিলারকে ফেরান জিমি নিশাম। শেষ বলে এইডেন মার্করাম ছয় মারলে কিউইদের বিপক্ষে ৩৫৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় প্রোটিয়ারা। মার্করাম ৬ ও ক্লাসেন ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। সাউদি ১০ ওভারে ৭৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন।
আগের ম্যাচে অজিদের দেওয়া ৩৮৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ৩৮৩ রান তোলে কিউইরা। তাই এই ম্যাচে হয়তো ভালো ফাইট হবে সবাই ভেবেছিল। কিন্তু হলো উল্টো। প্রোঠিয়া বোলারদের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের কোন ব্যাটার সেভাবে দাঁড়াতেই পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে হারাতে থাকে দলটি উইকেট। দলটির মাত্র ৩ জন্য ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছান।
পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে তারা তোলে ৫১ রান আর হারায় দুই উইকেট। দলীয় ৮ রানে ডেভন কনওয়ে ও ৪৫ রানের সময় তারা হারান রাচিন রাবীন্দ্রর উইকেট। ২ রান করা কনওয়ে ও ৯ রান করা রাচীনের উইকেট তুলে নেন মার্কো ইয়ানসেন।
দলীয় ৫৬ রানে ফেরেন উইল ইয়াং। ৩৩ রান করা ইয়াংয়ের উইকেট তুলে নেন জেরার্ড কোয়েৎজে।
চতুর্থ উইকেট হিসেবে বিদায় নেন কিউই অধিনায়ক টম লথাম ৪ রান করে। তার উইকেটটা নেন কাগিসো রাবাদা। এরপর ২৪ রান করা ড্যারি মিচেল আউট হন পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে। মিচেল ফেরেন কেশভ মহারাজেরস্পিন ভেলকিতে।
এরপর মিচেল স্যান্টনার-টিম সাউদি ও জেমস নিশামের উইকেট গিলো তুলে নেন ইয়েনসেন ও মাহারাজ। ৭ ও শূন্য রান করা স্যান্টনার এবং নিশামের উইকেট পান মহারাজ। আর ৭ রান করা সাউদিকে ফেরান ইয়ানসেন।
মিডল অর্ডারে নামা গ্লেন ফিলিপস ব্যাট হাতে শেষ দিকে চার-ছয় মেরে দর্শকদের নিছক আনন্দ জোগায়। কিন্তু ম্যাচ বাঁচাতে ব্যর্থ হন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিলিপস আউট হেওয়ার আগে করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬০ রান। তাকে ফেরান কোয়েৎজে। মাঝে ৯ রান করা বোল্টেকে ফেরান মহারাজ। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন কেশভ মহারাজ।