• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মহাকাশ থেকে বিদ্যুৎ আসবে পৃথিবীতে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২, ০৪:২২ পিএম
মহাকাশ থেকে বিদ্যুৎ আসবে পৃথিবীতে

মহাকাশে উৎপাদন করা হবে বিদ্যুৎ। তারপর সেই বিদ্যুৎকে মাইক্রোওয়েভে রূপান্তরিত করে আনা হবে পৃথিবীতে। এই প্রক্রিয়ায় জ্বালানি বিজ্ঞানকে এবার আরও কয়েক ধাপ উন্নত করার কথা ভাবছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি।

এ বিষয়ের ওপর গবেষণার জন্য তিন বছরের একটি কার্যক্রম শুরু করার অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সংস্থাটি। গবেষণায় দেখা হবে মহাকাশে সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় কি না এবং প্রক্রিয়াটির ব্যয় কেমন।

পৃথিবীর কক্ষপথে বিশাল বিশাল স্যাটেলাইট বসিয়ে প্রতিটি থেকে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমপরিমাণ শক্তি উৎপাদন করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। সূর্যের আলো থেকে সারাক্ষণই বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে প্রায় এক বর্গকিলোমিটার আয়তনজুড়ে বিস্তৃত সোলার প্যানেলগুলো। মহাকাশে যেহেতু রাত বা দিন নেই, মেঘের ছায়া কিংবা বৃষ্টি নেই, তাই সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে আরও কার্যকরভাবে।

সোলার প্যানেল বহন করা সেই স্যাটেলাইটগুলো হবে আমাদের বর্তমান স্পেস স্টেশনের আকৃতির তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বড় বা ১০টি ফুটবল মাঠের সমান। ১১০ মিটার আয়তনের স্পেস স্টেশনটিই এখন মহাকাশে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো।

মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এই কার্যক্রম নিয়ে ভাবছেন প্রায় ৫০ বছর ধরে। তবে অর্থ সংকুলানের ব্যবস্থা না হওয়া থেকে শুরু করে নানা সংকটের কারণে এগোতে পারেননি তারা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সংকট যখন সবার দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে, তখন এই ধারণা নিয়ে কাজ করা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না তারা।

সবকিছু মিলিয়ে মহাকাশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেই বিপর্যয় এড়ানোর অন্যতম উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ আবার পৃথিবীতে আনাও বেশ চ্যালেঞ্জিং। তার বা কেব্‌ল ব্যবহার করে তো এই কাজ করা অসম্ভব। তাই তারহীন ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন ছাড়া কোনো উপায় নেই এবং তাত্ত্বিকভাবে এটা সম্ভব। তারহীন প্রযুক্তিতে নিরাপদে ও কার্যকরভাবে বিদ্যুৎ স্থানান্তর করা যায়।

এই প্রক্রিয়ায়, মহাকাশে থাকবে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট আর পৃথিবীতে থাকবে রিসিভার প্ল্যান্ট। মহাকাশে উৎপাদিত বিদ্যুৎকে মাইক্রোওয়েভে রূপান্তর করে পাঠানো হবে রিসিভার প্ল্যান্টে। সেখানে মাইক্রোওয়েভকে পুনরায় বিদ্যুতে রূপান্তর করে পাওয়ার গ্রিডে পাঠানো হবে ব্যবহারের জন্য।

জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অপকারিতা আর সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের উপকারিতা মানুষের সামনে এখন স্পষ্ট। তাই নবায়নযোগ্য সৌরবিদ্যুৎকেই ভবিষ্যতের জ্বালানি হিসেবে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। মহাকাশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যে ‘স্পেস সোলার’ নামের একটি কোম্পানি গঠন করেছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। এই উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানও। তারও বেশ এগিয়ে আছে এই খাতে। 

 

সূত্র: বিবিসি

Link copied!