ইয়েমেনে আল কায়েদার হাতে অপহরণের শিকার জাতিসংঘের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনাম দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরেই অপহরণের রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।
সুফিউল আনাম বলেন, “অপহরণের পর আমাকে কখনো পাহাড়ে, কখনো মরুভূমিতে নিয়ে রাখা হয়েছে। এই পুরো সময়টাতেই কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে রেখেছিলেন অপহরণকারীরা।”
বুধবার (৯ আগস্ট) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।
অপহরণের পর ১৮ মাসে ১৮ বার স্থান পরিবর্তন করা হয় জানিয়ে সুফিউল আনাম বলেন, “খাওয়া-দাওয়াতে সমস্যা করেনি, শারীরিক নির্যাতন করেনি। তবে ভাবতে পারিনি বেঁচে ফিরব আমি। প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে মেরে ফেলবে। জানতাম না, আমাকে উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছে। আমাকে দিয়ে একবার ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলতে বলা হয়, আমাকে উদ্ধারে যেন দাবি পূরণ করা হয়। কিন্তু সেটা যে ৩০ লাখ ডলার ছিল আমি জানতাম না।”
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, “ভেবেছিলাম সবাই আমাকে ভুলে গেছে। অপহরণের ১ বছর ৬ মাস পূরণ হবে কাল। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার সময় আমাকে অপহরণ করা হয়। অবর্ণনীয় দিন কেটেছে আমার। প্রতিটি দিন ছিল মৃত্যুর ভয়। আমাকে চার সহযোগীসহ উদ্ধার করা হয়। বাকি চারজন ইয়েমেনি।”
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুফিউল আনাম বলেন, “এনএসআইয়ের দেখা পাওয়ার পর মনে হলো আমাকে ভোলেনি তারা। তাদের এই দায়িত্বপালনের কথা ভুলব না। ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। সিনেমায় দেখা যায় এসব। ফেরার পথে অস্ত্রের মুখে অপহরণ। ভাগ্য ভালো নির্যাতন করেনি। অপহরণকারীদের টাকা শেষ হলে চাপে ছিলাম। জাতিসংঘে কাজ করি বলে টার্গেট করেছিল মনে হয়।”
এর আগে দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাকে গ্রহণ করেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) শীর্ষ কর্মকর্তারা।