ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেষ মুহূর্তেও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে পদত্যাগে রাজি করাতে তার ছোট বোন শেখ রেহানা তার পায়ে পর্যন্ত ধরেছিলেন।
রোববার (২৫ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক চাঞ্চল্যকর তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটার তাজুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক সংকটের চূড়ান্ত পর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে রাজি করাতে তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়। এমনকি শেখ হাসিনার পা পর্যন্ত ধরেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, পরিবারের সদস্যদের বোঝানোর পর, বিশেষ করে শেখ রেহানার অনুরোধ এবং বিদেশে থাকা তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ফোনালাপের পরই শেখ হাসিনা পদত্যাগে রাজি হন। এরপর দ্রুত পদত্যাগ করে গোপনে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা।
প্রসিকিউশনের দাখিল করা তদন্ত নথিতে বলা হয়, ওইদিন সকালে আন্দোলনকারীরা কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নেমে আসে। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতাও সীমিত হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিন বাহিনীর প্রধান ও পুলিশ প্রধানকে গণভবনে ডেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
পুলিশ মহাপরিদর্শকের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে বলপ্রয়োগ করেও আন্দোলন থামানো সম্ভব নয়। এরপর সেনা কর্মকর্তারা শেখ রেহানাকে আলাদা কক্ষে নিয়ে গিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এবং তাকে শেখ হাসিনাকে বোঝাতে বলেন।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, শেখ হাসিনা পদত্যাগের আগে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রেকর্ড করতে চাইলেও তখনই গোয়েন্দা রিপোর্ট আসে, শাহবাগ ও উত্তরা থেকে বিশাল মিছিল গণভবনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তাকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে গণভবন ত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। পরে তিনি দেশত্যাগ করে ভারত চলে যান।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আরও বলেন, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে চার দফায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নানা বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে টানা ক্ষমতায় থাকেন তিনি।